সম্পত্তি বিরোধ

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

রিনা ও বীণা দুই বোন। তাদের বাবা যাবের সাহেবের দুটি সংসার। প্রথম স্ত্রীর দুই সন্তান, এক ছেলে এক মেয়ে। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর যাবের সাহেব রিনা ও বীণার মাকে বিয়ে করেন। যাবের সাহেব এখনও জীবিত কিন্তু তিনি রিনা ও বীণার মায়ের নামে কোন জমিজমা লিখে দেননি। এই অবস্থায় যাবের সাহেবের প্রথম সংসারের ছেলে মারুফ, রিনা, বীণা এবং তাদের মাকে সহ্য করতে পারছে না এবং তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিতে চাইছে। যাবের সাহেব জীবিত থাকায় মারুফ কিছু করতে পারছে না, কিন্তু তিনি একাধিকবার এমন কিছু করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।

যাবের সাহেবের মৃত্যুর পর রিনা ও বীণার পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। তাদের কোনো ভাই নেই এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাদের পক্ষে কোনো ভূমিকা পালন করতে পারবে না। এই আশঙ্কায় রিনা ও বীণা আছেন যে, তাদের বাবা মারা গেলে মারুফ তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারে।

একজন পুরুষের প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিবাহ করাকে কটু দৃষ্টিতে দেখা উচিত নয়। প্রথম সন্তানদের দেখাশোনা, জৈবিক চাহিদা কিংবা একাকীত্ব দূর করার জন্য অনেকেই দ্বিতীয় বিবাহ করেন। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও পুনরায় বিবাহকে বৈধ বলে মনে করা হয়।

যাবের সাহেবের দুই সংসারের সন্তানদের মধ্যে অসৎ আচরণ স্বাভাবিক। আমাদের সমাজে একই বাবার ভিন্ন মায়ের সন্তানদের মধ্যে সম্পর্ক কখনোই আন্তরিক থাকে না। রিনা ও বীণার আশঙ্কা আমাদের সমাজের অনেক ছেলেমেয়েই করে থাকেন, বিশেষ করে যখন তাদের সৎ ভাইবোন বয়সে বড়, ক্ষমতাধর এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মতো কোনো অভিভাবক নেই।

তবে, রিনা ও বীণার সৌভাগ্য যে তাদের বাবা এখনও জীবিত আছেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পিতার মৃত্যুর পর দুই সংসারের সন্তানদের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। তাই, যাবের সাহেবের উচিত হবে জীবিত অবস্থায় তার সকল সম্পত্তির একটি সুষম বণ্টন করে দেওয়া। এতে ভবিষ্যতে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ এড়ানো সম্ভব হবে।

মারুফ, যাবের সাহেবের প্রথম সংসারের ছেলে, রিনা ও বীণাকে সহ্য করতে পারছে না এবং সম্পত্তি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই যাবের সাহেবের উচিত জীবিত অবস্থায় তার সকল সম্পত্তি লিখিতভাবে বণ্টন করে দেওয়া।

বাবার মৃত্যুর পর আইনানুগ ভাবে সম্পত্তি বণ্টন হবে, কিন্তু বাটোয়ারা মামলায় আইনি জটিলতা অনেক। সৎ ভাইবোনের মধ্যে এ জটিলতা প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চলতে পারে। সকল সম্পত্তির বাজার মূল্য সমান নয়, তাই ক্ষমতাবান ব্যক্তি মূল্যবান সম্পত্তি আদায় করে নিতে পারে।

যেমন, যাবের সাহেবের যদি ১০ শতাংশ জমি থাকে, তার মধ্যে বসবাসের জন্য ৫ শতাংশ এবং বাণিজ্যিক ৫ শতাংশ, তাহলে বাণিজ্যিক জমির মূল্য অনেক বেশি হবে। মারুফ ক্ষমতা দেখিয়ে মূল্যবান সম্পত্তিটি নিতে পারে, ফলে রিনা ও বীণা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তাই, যাবের সাহেবের উচিত জীবিত অবস্থায় সম্পত্তির সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করা। পিতা জীবিত অবস্থায় সন্তানদের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টন করে দিলে ভবিষ্যতে বিরোধের সম্ভাবনা কমে যায়। হেবা দলিল বা অছিয়তনামার মাধ্যমে দুই সংসারের সন্তানদের মধ্যকার বিরোধ এড়ানো যায়।

মূল তথ্যাবলী:

  • যাবের সাহেবের দুটি সংসারের মধ্যে সম্পত্তি বিরোধের আশঙ্কা
  • প্রথম স্ত্রীর ছেলে মারুফ দ্বিতীয় স্ত্রীর মেয়েদের সহ্য করতে পারে না
  • যাবের সাহেব জীবিত থাকার কারণে বিরোধ সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে আছে
  • যাবের সাহেবের মৃত্যুর পর সম্পত্তি নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা
  • জীবিত অবস্থায় সম্পত্তি বণ্টন করে দুই সংসারের সন্তানদের মধ্যে বিরোধ এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - সম্পত্তি বিরোধ

১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

এই ঘটনায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ ছিল।