শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী (Sri Lanka Navy বা SLN) হলো শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনীর একটি অংশ এবং দেশটির সমুদ্র-সামরিক বাহিনী। শ্রীলঙ্কা একটি দ্বীপরাষ্ট্র হওয়ায়, এর নৌবাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমর দায়িত্ব ছাড়াও, তারা মাদক চোরাচালান, অবৈধ জাহাজ আটক, জলদস্যু দমন ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত।
এই বাহিনীর ইতিহাস ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীর সাথে জড়িত। ১৯৩৯ সালে, ব্রিটিশরা এটিকে 'রয়্যাল সিলন নেভি' নামে প্রতিষ্ঠা করে। শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার পর ১৯৫০ সালের ৯ই ডিসেম্বর, 'স্বাধীন শ্রীলঙ্কার প্রথম নৌবাহিনী আইন' (নেভি অ্যাক্ট) প্রণয়ন করা হয়। ১৯৭২ সালে 'সিলন' নাম পরিবর্তন করে 'শ্রীলঙ্কা' হলে, নৌবাহিনীর নামও 'শ্রীলঙ্কা নেভি' হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ১৯৭১ সালে জেভিপি'র জঙ্গি হামলা, এবং শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধে নৌবাহিনী উভয় স্থল ও জল-পরিবেশে যুদ্ধ করেছে। এই বাহিনীর প্রধান অধিনায়ক একজন ভাইস এডমিরাল।
সত্তরের দশকের মাঝামাঝি থেকে নারী নাবিক ও কর্মকর্তা নিয়োগ শুরু হয়। যদিও নারী নাবিকরা সর্বোচ্চ পদে পৌঁছাতে পারেন, কিন্তু কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা ছিল। তবে, ২০০০-এর দশকে ইন্দ্রনী ওয়াই অমরসিংহ নামের একজন নারী ডাক্তার ক্যাপ্টেন পদবী পর্যন্ত পদোন্নতি পেয়েছিলেন এবং পরে অবসরের আগে কমোডোর পদে উন্নীত হন।
সম্প্রতি, শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী ভারত মহাসাগরে ইঞ্জিন বিকল একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১০২ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে উদ্ধার করেছে। এদের মধ্যে ২৫ জন শিশুও ছিল। উদ্ধারকৃত শরণার্থীদের ত্রিনকোমালি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাদের খাবার, পানি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এই উদ্ধার অভিযান শ্রীলঙ্কা নৌবাহিনীর মানবিক ভূমিকার একটি উদাহরণ।