শেরপুর, বগুড়া

আপডেট: ৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৪২ পিএম
নামান্তরে:
শেরপুর বগুড়া
শেরপুর, বগুড়া

শেরপুর, বগুড়া: ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বর্তমান

বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলা উত্তরবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। ২৯৫.৯৩ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলাটি ২৪°৩২´ থেকে ২৪°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°২০´ থেকে ৮৯°৩২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। উত্তরে শাহজাহানপুর, দক্ষিণে রায়গঞ্জ ও তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ জেলা), পূর্বে ধুনট, এবং পশ্চিমে নন্দীগ্রাম ও সিংড়া (নাটোর জেলা) উপজেলায় এর সীমানা।

জনসংখ্যা ও জনগোষ্ঠী: ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী শেরপুর উপজেলার জনসংখ্যা ৩৩২,৮২৫ জন; পুরুষ ১৬৫,৫২৭ এবং মহিলা ১৬৭,২৯৮। এখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মের মানুষ বসবাস করে। সাঁওতাল আদিবাসী জনগোষ্ঠীরও অস্তিত্ব রয়েছে।

প্রাকৃতিক ভূগোল: করতোয়া, হলহলিয়া ও ভাদর নদী এই উপজেলার প্রধান জলাশয়।

প্রশাসন: ১৯৬২ সালে শেরপুর থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব: শেরপুরের ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সিরাজনগর মসজিদ, শেরশাহ মসজিদ, খেরুয়া মসজিদ, ভবানীপুর কালীমন্দির, এবং গোবিন্দ রায় মন্দির এই অঞ্চলের প্রাচীন নিদর্শনাদি। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঘড়া কলোনী, ঘোগাব্রিজ ও দড়িমুকন্দসহ বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর নৃশংসতার করুণ কাহিনী জড়িত। 'শেরপুর থানা অপারেশন' মুক্তিযুদ্ধের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

অর্থনীতি: কৃষিই এখানকার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। ধান, গম, পাট, ভুট্টা, সরিষা, কালাই, পান, আলু, পিঁয়াজ এবং বিভিন্ন শাকসবজি এখানকার প্রধান কৃষি ফসল। কুটিরশিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকুরির মাধ্যমেও মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। রাইসমিল, স’মিল, আটাকল, তাঁতশিল্প, সূচিশিল্প, স্বর্ণশিল্প ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য শিল্প।

শিক্ষা ও সংস্কৃতি: শেরপুর উপজেলার শিক্ষার হার ৪৩%। এখানে কলেজ, টেকনিক্যাল কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেজি স্কুল এবং মাদ্রাসা রয়েছে। শেরপুর কলেজ, ছোনকা দ্বি-মুখী উচ্চবিদ্যালয়, শেরপুর ডায়মন্ড জুবিলী হাইস্কুল, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজ, শহীদিয়া আলী মাদ্রাসা উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। লাইব্রেরি, নাট্যদল, সিনেমা হল এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন উপজেলার সাংস্কৃতিক চিত্র সমৃদ্ধ করে।

যোগাযোগ: পাকা, আধা-পাকা এবং কাঁচা রাস্তার মাধ্যমে উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুর্বর নয়।

উল্লেখযোগ্য স্থান: পল্লী উন্নয়ন একাডেমি পর্যটন কেন্দ্র এবং সাউদিয়া পার্কসিটি বিনোদনকেন্দ্র দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণীয়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ: ১৮৮৫ সালের ভূমিকম্প শেরপুরে বিধ্বংসী প্রভাব ফেলেছিল।

অন্যান্য তথ্য: এই তথ্যগুলি ২০১১ সালের আদমশুমারি রিপোর্ট এবং ২০০৭ সালের শেরপুর উপজেলা সাংস্কৃতিক সমীক্ষা প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য শেরপুর উপজেলার সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন ও সরকারি ওয়েবসাইট দেখার অনুরোধ করা হচ্ছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • শেরপুর উপজেলা বগুড়া জেলার অন্তর্গত।
  • এর আয়তন ২৯৫.৯৩ বর্গকিলোমিটার।
  • ২০১১ সালে জনসংখ্যা ছিল ৩৩২,৮২৫ জন।
  • কৃষি এর অর্থনীতির মূল ভিত্তি।
  • মুক্তিযুদ্ধে শেরপুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
  • ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।