শেখ মামুনুর রশিদ নামটি দুই ব্যক্তিকে নির্দেশ করতে পারে। প্রথম ব্যক্তি একজন বিখ্যাত বাংলাদেশী নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি একজন সাংবাদিক।
নাট্য ব্যক্তিত্ব শেখ মামুনুর রশিদ:
শেখ মামুনুর রশিদ (জন্ম: ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮) একজন বাংলাদেশী নাট্যকার, অভিনেতা এবং নাট্য পরিচালক। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের মঞ্চ আন্দোলনের একজন পথিকৃৎ। তাঁর নাট্যকর্মে প্রখর সমাজ সচেতনতা লক্ষণীয়। শ্রেণীসংগ্রাম তাঁর নাটকের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু। তিনি টিভির জন্য অসংখ্য নাটক রচনা ও অভিনয় করেছেন। বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু, শ্রেণীসংগ্রাম, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিকার আদায়ের আন্দোলন নিয়ে নাটক রচনা ও পরিবেশনা করে বাংলাদেশের নাট্য জগতে তিনি স্বতন্ত্র স্থান অর্জন করেছেন। নাট্যকলায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১২ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলেও স্বৈরশাসনের প্রতিবাদে তিনি পুরস্কারটি প্রত্যাখ্যান করেন।
তাঁর জন্ম টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতির পাইকড়া গ্রামে। পিতা হারুনুর রশীদ ডাক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় তাঁর শিক্ষাজীবন কেটেছে। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পুরকৌশলে ডিপ্লোমা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তানে টেলিভিশনের জন্য নাটক লেখা শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সাথে যুক্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের পর 'মুক্ত নাটক আন্দোলন' শুরু করেন এবং ১৯৭২ সালে কলকাতা থেকে ফিরে তিনি 'আরণ্যক নাট্যদল' গঠন করেন।
প্রয়াত সাংবাদিক শেখ মামুনুর রশিদ:
অন্য শেখ মামুনুর রশিদ একজন প্রয়াত সাংবাদিক ছিলেন। তিনি নড়াইলে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে ৩৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। একুশে টেলিভিশনে কর্মরত ছিলেন এবং প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্ব পালন করতেন। এর আগে এশিয়ান টিভি ও বাংলাভিশনেও কাজ করেছেন।