সাদ্দাম হোসেন

সাদ্দাম হোসেন: ইরাকের এক বিতর্কিত শাসক

সাদ্দাম হোসেন (২৮ এপ্রিল ১৯৩৭ - ৩০ ডিসেম্বর ২০০৬) ইরাকের একজন বিতর্কিত ও প্রভাবশালী রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৯৭৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি ইরাক শাসন করেছিলেন। তাঁর শাসনামল ছিল একনায়কতান্ত্রিক, নির্যাতন ও যুদ্ধের দ্বারা চিহ্নিত। তিকরিত শহরের কাছে আল-আওজা গ্রামে জন্মগ্রহণকারী সাদ্দাম হোসেনের শৈশব কেটেছে দারিদ্র্য ও অস্থিরতার মধ্যে। তিনি বাল্যকালে বাথ পার্টিতে যোগ দেন এবং ধীরে ধীরে ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে যান।

১৯৭৯ সালে, জেনারেল আহমেদ হাসান আল বকরকে উৎখাত করে সাদ্দাম ইরাকের রাষ্ট্রপতি হন। তার শাসনামলে ইরান-ইরাক যুদ্ধ (১৯৮০-১৯৮৮), কুর্দদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও উপসাগরীয় যুদ্ধ (১৯৯১) সম্মুখীন হতে হয়। সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলে ইরাকের অভ্যন্তরীণ ও বহির্বিশ্বের সাথে সম্পর্ক খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা ও আরব জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ছিলেন, কিন্তু একই সাথে তিনি একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ও বিরোধীদের বিরুদ্ধে নির্মম নির্যাতন চালিয়েছিলেন।

২০০৩ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এক আন্তর্জাতিক বাহিনী ইরাক আক্রমণ করে সাদ্দামের শাসন উৎখাত করে। যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছিল সাদ্দাম গণ-ধ্বংসাত্মক অস্ত্র তৈরি করছেন, যদিও এই অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ১৩ ডিসেম্বর ২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনকে আমেরিকান বাহিনী ধরে। পরবর্তীতে তার বিচার চলে এবং তাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৬ সালে ইরাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে সাদ্দাম হোসেনকে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।

সাদ্দাম হোসেনের শাসনামল ইরাকের ইতিহাসে একটি বিতর্কিত অধ্যায়। তার শাসন একদিকে ইরাকের অর্থনৈতিক উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য সুযোগ সৃষ্টি করেছিল, অন্যদিকে তার নির্যাতন ও যুদ্ধের কারণে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। তার শাসনামলের প্রভাব আজও ইরাকে স্পষ্ট।

মূল তথ্যাবলী:

  • সাদ্দাম হোসেন ইরাকের একজন বিতর্কিত রাষ্ট্রপতি ছিলেন।
  • তিনি ১৯৭৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ইরাক শাসন করেছিলেন।
  • তার শাসনামল ছিল একনায়কতান্ত্রিক ও নির্যাতনপূর্ণ।
  • তিনি ইরান-ইরাক যুদ্ধ এবং উপসাগরীয় যুদ্ধে জড়িত ছিলেন।
  • ২০০৩ সালে তাকে আমেরিকান বাহিনী গ্রেফতার করে এবং ২০০৬ সালে ফাঁসি দেওয়া হয়।