শেখ নাহার মাহমুদ

আপডেট: ১ জানুয়ারী ২০২৫, ২:৩৬ এএম

বেগম শামসুন নাহার মাহমুদ (১৯০৮ - ১০ এপ্রিল ১৯৬৪) ছিলেন বাংলাদেশের নারী মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম অগ্রণী নেত্রী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ এবং সমাজসেবিকা। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্নেহধন্য ছিলেন এবং কবির কাছ থেকে তিনি ব্যাপক অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা পেয়েছিলেন। 'নজরুলকে যেমন দেখেছি' তার একটি বিখ্যাত গ্রন্থ, যা কবিকে কেন্দ্র করে লেখা। মুসলিম সমাজে নারী শিক্ষার প্রসার ও অবরোধপ্রথা দূরীকরণে তার অবদান অসামান্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ছাত্রী হল এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হল তার নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে।

১৯০৮ সালের ১৯ অক্টোবর বর্তমান বাংলাদেশের ফেনী জেলার গুথুমা গ্রামের মুন্সীবাড়ীতে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। তিনি পিতৃহীনা ছিলেন। চট্টগ্রামের তামাকুমন্ডিস্থ নানা খান বাহাদুর আব্দুল আজিজের বাড়িতে মা ও ভাই হবীবুল্লাহ বাহারের সাথে বড় হন। ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে ১৯২৬ সালে ব্যক্তিগতভাবে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯২৮ সালে ডায়েসিমন কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৩২ সালে বিএ পাশ করেন। বেগম রোকেয়া তাঁর বিএ পাশের উপলক্ষে সংবর্ধনা দেন। ১৯৪২ সালে এমএ পাশ করেন। পড়াশোনা শেষ করে বেগম রোকেয়ার নেতৃত্বে নারী অধিকার আন্দোলনে যোগ দেন।

শামসুন নাহার কিছুদিন নিখিল বঙ্গ মুসলিম মহিলা সমিতির সম্পাদক ছিলেন। ১৯৫২ সালে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্য সফর করেন। কলম্বোতে ইন্টারন্যাশন্যাল কাউন্সিল অব ওমেন-এর একটি দলের নেতৃত্ব দেন এবং ইন্টারন্যাশনাল ফ্রেন্ডশিপ অর্গানাইজেশনে এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

কাজী নজরুল ইসলামের সাথে তার ও তার ভাইয়ের খুব ভাল সম্পর্ক ছিল। কলকাতায় থাকাকালীন কবির অনুপ্রেরণায় লেখা শুরু করেন। 'আঙ্গুর' পত্রিকায় তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। 'নওরোজ' ও 'আত্মশক্তি' পত্রিকার নারী বিষয়ক অংশের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। নজরুল ইসলাম তার 'সিন্ধু হিন্দোল' কাব্যগ্রন্থ 'বাহার ও নাহার'-কে (হবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী ও শামসুন নাহারকে) উৎসর্গ করেন।

১৯২৭ সালে তিনি ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদকে বিয়ে করেন, যিনি তখন পূর্ব পাকিস্তানের একজন বিশিষ্ট শল্য-চিকিৎসক ছিলেন। তাদের দুই ছেলে ছিলেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এক ছেলে শহীদ হন। অন্য ছেলে মইনউদ্দীন মাহমুদ ছিলেন ক্রিকেটার ও ক্রীড়া উদ্যোক্তা।

ঢাকায় ১৯৬৪ সালের ১০ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়। ১৯৮১ সালে সমাজসেবার জন্য তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার এবং ১৯৯৬ সালে 'বেগম রোকেয়া পদক' প্রদান করা হয়।

মূল তথ্যাবলী:

  • বেগম শামসুন নাহার মাহমুদ ছিলেন বাংলাদেশের নারী মুক্তি আন্দোলনের অগ্রণী নেত্রী।
  • তিনি একজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবিকা ছিলেন।
  • কাজী নজরুল ইসলামের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
  • তিনি ১৯৬২ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
  • তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার এবং বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করা হয়।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - শেখ নাহার মাহমুদ

১ জানুয়ারী ২০২৫

বিএসইসি কর্তৃক বেক্সিমকোর তিনটি কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।

শেখ নাহার মাহমুদ বেক্সিমকোর দুইটি কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।