শিবালয় উপজেলা: মানিকগঞ্জের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ
বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জ জেলায় অবস্থিত শিবালয় উপজেলা, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ একটি অঞ্চল। ১৯৯.১৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলাটি মানিকগঞ্জের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা। পদ্মা, যমুনা ও ইছামতি নদীর তীরবর্তী এলাকা হিসেবে এটি ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত:
১৮৭৫ সালে জাফরগঞ্জে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও, যমুনার ভাঙ্গনের কারণে ১৯০০ সালে শিবালয়ে স্থানান্তরিত হয়। এই নামকরণের পেছনে রয়েছে এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাচীন শিব মন্দির। ১৯৮৪ সালে এটি উপজেলায় উন্নীত হয়। এই উপজেলায় রয়েছে বহু প্রাচীন নিদর্শন, যেমন একডালা দুর্গ, কাটাসগড় দুর্গ, ঢাকীজোড়ার দুর্গ, দাসচিরা বৌদ্ধবিহার, নবরত্ন মঠ, তেওতা জমিদার বাড়ি, মাচাইন মসজিদ, শাহ রুস্তমের মাজার ইত্যাদি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধেও শিবালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। নয়াবাড়িতে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পের উপর পাকসেনার আক্রমণ ও এর পরবর্তী যুদ্ধ এ অঞ্চলের ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
জনসংখ্যা ও অর্থনীতি:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, শিবালয় উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ১৭১,৮৭৩। জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ কৃষিকাজের সাথে জড়িত। এছাড়াও, ব্যবসা, পরিবহণ, চাকরি, শিল্প (বিদ্যুৎ খুঁটির কারখানা, মোমবাতি ও আগরবাতি কারখানা ইত্যাদি) এবং কুটির শিল্প (তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, ধাতুশিল্প ইত্যাদি) উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। উপজেলায় ১৯ টি হাটবাজার এবং ৪ টি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যুৎ ব্যবহারের হার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:
শিক্ষার হার ৫৩.৩%। উপজেলায় ডিগ্রি কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, একাডেমি ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, চক্ষু হাসপাতাল ইত্যাদি সুবিধা আছে। বিভিন্ন এনজিও, যেমন ব্র্যাক, প্রশিকা, আশা, সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে।
আরও তথ্য:
শিবালয় উপজেলা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।