শরণখোলা

আপডেট: ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৭:১৪ এএম

শরণখোলা: বাগেরহাটের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা

বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত শরণখোলা উপজেলা ৭৫৬.৬০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের একটি প্রশাসনিক এলাকা। এটি উত্তরে মোড়েলগঞ্জ, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পূর্বে মঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা, এবং পশ্চিমে মংলা উপজেলার সাথে সীমান্তবর্তী। ১৯০৭ সালে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত শরণখোলা ১৯৮২ সালে উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। উপজেলার বৃহৎ অংশ সুন্দরবনের অধীনে।

জনসংখ্যা ও ভূগোল:

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, শরণখোলা উপজেলার জনসংখ্যা ১১৯,০৮৪ জন; পুরুষ ৬২,৪০০ এবং মহিলা ৫৬,৬৮৪। ধর্মীয়ভাবে, ১০৯,৮৩৬ জন মুসলিম, ৯,২৩২ জন হিন্দু, ৪ জন বৌদ্ধ এবং ১২ জন খ্রিস্টান। উপজেলার প্রধান নদীগুলি হল বলেশ্বরী, হরিণঘাটা, ভোলা এবং বেতমার গাঙ। আমড়াগাছিয়া গ্রামের সিংবাড়ির মোহিনী কুটির একটি প্রাচীন নিদর্শন।

ঐতিহাসিক ঘটনা ও মুক্তিযুদ্ধ:

১৯৬৫ সালে লবণাক্ততার হাত থেকে জমি রক্ষার জন্য নির্মিত বেড়িবাঁধের ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং ফসল নষ্ট হয়। ১৯৬৯ সালের ১০ই মার্চ স্থানীয় কৃষকদের বিদ্রোহের ফলে রায়েন্দা, তাফালবাড়ি, খোন্তাকাটা, কুমারখালি খালের বাঁধ ভেঙে দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্যাঁড়াবাঁকা খালে শতাধিক মানুষকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয়। রায়েন্দা বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যেমন ২১ অক্টোবর বগীতে।

অর্থনীতি ও উন্নয়ন:

শরণখোলার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি (৫১.৮৫%), যার মধ্যে ধান ও ডাল প্রধান ফসল। অন্যান্য উৎসগুলির মধ্যে রয়েছে অকৃষি শ্রমিক (৯.৫৯%), ব্যবসা (১৬.২৪%), চাকরি (৬.৫৬%) ইত্যাদি। সুন্দরবন এলাকায় গ্যাস ও খনিজ তেল অনুসন্ধান চলছে। উপজেলার সব ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন, তবে ২৩.৫% পরিবার বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারে। শিক্ষার হার ৫৮.৯%; পুরুষ ৫৭.৩%, মহিলা ৬০.৬%। শরণখোলায় ২ টি কলেজ, ১৭ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এবং ১৩ টি মাদ্রাসা রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১টি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২টি এবং পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৪টি রয়েছে।

সংস্কৃতি ও যোগাযোগ:

শরণখোলায় ৩টি লাইব্রেরী, ১টি প্রেসক্লাব, ১২টি সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ২টি সিনেমা হল রয়েছে। যোগাযোগের জন্য ৪০ কিমি পাকা রাস্তা, ২৯ কিমি আধাপাকা রাস্তা এবং ৩০০ কিমি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। নৌপথ ৯২ কিমি।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ:

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর শরণখোলায় ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।

উল্লেখ্য, এই তথ্য সীমিত। আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেলে আপডেট করা হবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • শরণখোলা উপজেলা বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত।
  • ৭৫৬.৬০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলা ১৯০৭ সালে থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, জনসংখ্যা ১১৯,০৮৪।
  • মুক্তিযুদ্ধে শরণখোলায় গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছিল।
  • কৃষি এই উপজেলার অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি।
  • সুন্দরবন এই উপজেলার প্রাকৃতিক সম্পদের উল্লেখযোগ্য অংশ।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।