লোকসভা: ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ
ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভা (Lok Sabha), যা 'জনসাধারণের কক্ষ' নামেও পরিচিত, দেশের গণতন্ত্রের এক অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি রাজ্যসভার সাথে মিলে দ্বিকক্ষ সংসদ গঠন করে। লোকসভার সদস্যরা জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন, ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট পদ্ধতিতে। প্রতিটি সদস্য তাদের নির্বাচনী কেন্দ্রের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদের মেয়াদ সাধারণত পাঁচ বছর, যদি না রাষ্ট্রপতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদের পরামর্শে লোকসভা বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। নয়াদিল্লির সংসদ ভবনে লোকসভার অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবিধান অনুযায়ী, লোকসভার সর্বোচ্চ আসনসংখ্যা ৫৫২। বর্তমানে ৫৪৩টি আসন রয়েছে, যা ২৮টি রাজ্য এবং ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে প্রতিনিধিত্ব করে। মোট আসনের ২৪.০৩% (১৩১টি) তফসিলি জাতি ও তফসিলি জনজাতির জন্য সংরক্ষিত। ১৯৫০ সালে লোকসভার আসনসংখ্যা ছিল ৫০০। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে সংবিধান (একশত চতুর্থ সংশোধন) আইন, ২০১৯ বলবৎ হওয়ার মাধ্যমে ইঙ্গ-ভারতীয় সম্প্রদায় থেকে মনোনীত সদস্যদের রীতির অবসান ঘটে। নতুন সংসদ ভবনের লোকসভা কক্ষের ধারণক্ষমতা ৮৮৮ জন।
লোকসভার কোরাম মোট সদস্যের ১০%। আইনবিধি অনুযায়ী, জরুরি অবস্থা ব্যতীত লোকসভা প্রথম অধিবেশন থেকে পাঁচ বছর কার্যকর থাকে। ভারতের জনগণনা এবং সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশনের সুপারিশে লোকসভা কেন্দ্রের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। সর্বশেষ পুনর্নির্ধারণ হয়েছিল ২০১১ সালে। সংসদ টিভি চ্যানেল লোকসভার লাইভ কর্মকাণ্ড প্রচার করে।
ভারতের সংবিধানের পঞ্চম ভাগে লোকসভার সদস্যপদের যোগ্যতা নির্ধারিত আছে। সাধারণত লোকসভার কার্যকাল সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা এবং দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা। প্রতিদিনের প্রথম ঘন্টাটি প্রশ্নোত্তর কালের জন্য বরাদ্দ থাকে। অর্থ বিল ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ে রাজ্যসভা ও লোকসভার আইন প্রণয়ন ক্ষমতা সমান। অর্থ বিলে লোকসভার ক্ষমতা সর্বোচ্চ। প্রতিবছর লোকসভার তিনটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।