ডা. লুবাবা শাহরিন: শীতকালীন ডায়রিয়া ও তার প্রতিরোধ
বাংলাদেশে শীতকালে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)-এর বিজ্ঞানী ডা. লুবাবা শাহরিনের গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য রয়েছে। তিনি জানান, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল। তীব্র শীতের আগেই এই প্রকোপ শুরু হয় এবং শুষ্ক আবহাওয়ার সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে। আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ভর্তি ডায়রিয়া রোগীদের ৬০-৭০% শিশু এবং বাকিরা প্রাপ্তবয়ষ্ক। শীতকালীন ডায়রিয়ার প্রধান কারণ হলো কিছু ভাইরাস, যার মধ্যে রোটাভাইরাস অন্যতম। তবে ডা. লুবাবা উল্লেখ করেন যে, শুধুমাত্র রোটাভাইরাসই এর জন্য দায়ী নয়, অন্যান্য ভাইরাসও এর সাথে জড়িত থাকতে পারে। তিনি আরও জানান, শীতকালীন ডায়রিয়া সাধারণত নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায় (self-limiting)। শীতকালীন ডায়রিয়ার লক্ষণগুলো হালকা কাশি, নাক দিয়ে পানি পড়া, সামান্য জ্বর, থেমে থেমে বমি এবং পাতলা পায়খানা। ডা. লুবাবা শাহরিনের মতে, শিশুদের মধ্যে ভাইরাল ইনফেকশন খুব সাধারণ এবং এটি নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে রোগী যদি এক ঘন্টায় তিনবারের বেশি বমি করে, অসুস্থতা বেশি থাকে বা খিঁচুনি হয়, তাহলে অবিলম্বে হাসপাতালে নেওয়া উচিত। চিকিৎসার ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাণে ওরস্যালাইন প্রয়োগ করা গুরুত্বপূর্ণ এবং ওরস্যালাইন ব্যবহারের নির্দেশনা মেনে চলা প্রয়োজন। তিনি আরও জানান, শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন ডায়রিয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে; শীতকালীন ডায়রিয়ায় পানিশূন্যতা কম থাকে। অ্যান্টিবায়োটিক ভাইরাল ডায়রিয়ার জন্য কার্যকর নয় এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত স্যালাইন দেওয়াও ক্ষতিকারক হতে পারে।