রিপন নাথ: বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের অসাধারণ শব্দ পরিকল্পক
রিপন নাথ বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট শব্দ পরিকল্পক ও শব্দগ্রাহক। তার দীর্ঘ ও সমৃদ্ধ কর্মজীবনে তিনি অসংখ্য চলচ্চিত্র, টেলিভিশন নাটক, বিজ্ঞাপন, এবং প্রামাণ্য চিত্রের শব্দ পরিকল্পনার সাথে জড়িত। তার কাজের বিশেষত্ব হলো শব্দের মাধ্যমে দর্শকদের চলচ্চিত্রের সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত করে তোলা।
কর্মজীবন ও সাফল্য:
রিপন নাথের কর্মজীবন শুরু হয় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান এশিয়াটিকের ধ্বনিচিত্রে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এখানে কাজ করার পর তিনি নিজস্ব প্রতিষ্ঠান সাউন্ডবক্স স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেন। তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে মনপুরা (২০০৯), থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার (২০০৯), টেলিভিশন (২০১২), আয়নাবাজি (২০১৬), ডুব (২০১৭), ন ডরাই (২০১৯), ফাগুন হাওয়ায় (২০১৯), হাওয়া (২০২২) এবং সুড়ঙ্গ (২০২৩) চলচ্চিত্র। তিনি বাংলাদেশের প্রায় সকল ভিজ্যুয়াল মিডিয়ার বিভাগেই কাজ করেছেন। শব্দ পরিকল্পনার পাশাপাশি তিনি কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীতায়োজক হিসেবেও অনেক কাজ করেছেন।
তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে পাঁচবার ‘শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক’ হিসেবে সম্মানিত হয়েছেন। এছাড়াও, ২০১৯ সালে সার্ক চলচ্চিত্র উৎসবে ফাগুন হাওয়ায় (২০১৯) চলচ্চিত্রের জন্য সেরা শব্দ পরিকল্পনার পুরস্কার লাভ করেন। তার কাজের জন্য তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও স্বীকৃতি পেয়েছেন।
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা:
রিপন নাথের বেড়ে ওঠা রাজবাড়ী, চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। তার বাবা ছিলেন রেলের সরকারী কর্মকর্তা এবং মা গৃহিনী। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। স্নাতক শিক্ষার্থী থাকাকালীন শব্দ প্রকৌশলী রতন পালের কাছ থেকে শব্দ নিয়ে কাজের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন।
অন্যান্য কর্ম:
শব্দ পরিকল্পনার বাইরে, রিপন নাথ বিজ্ঞাপন ও প্রামান্য চিত্রে কণ্ঠদান করেন। তিনি দীর্ঘদিন সুরকার হিসেবেও কাজ করেছেন এবং কয়েকটি চলচ্চিত্রের সঙ্গীতায়োজন করেছেন। এছাড়াও, তিনি কিছু টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম এন্ড মিডিয়া বিভাগে খন্ডকালীন শিক্ষকতা করেছেন।
রিপন নাথের কর্মজীবন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে একটি উল্লেখযোগ্য অবদান। তার অসামান্য কাজের জন্য তিনি সর্বদাই স্মরণীয় থাকবেন।