রিং শাইন টেক্সটাইল: ঋণ, লোকসান ও শেয়ার বিক্রয়ের অধ্যায়
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি রিং শাইন টেক্সটাইল লিমিটেড সম্প্রতি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। ২০১৯ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর থেকেই কোম্পানিটি লাভের চেয়ে লোকসানের দিকেই ঝুঁকেছে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) এর মাধ্যমে ১৫০ কোটি টাকা তুলেও, ২০২০ সালে উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হয় কোম্পানিটি।
অর্থনৈতিক অবস্থা: রিং শাইন টেক্সটাইলের আর্থিক অবস্থা দুর্বল। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি ৭৯ পয়সা লোকসান হয়েছে। আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ৮৬ পয়সা। কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের ঋণাত্মক নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ৮ টাকা ৮২ পয়সা। রিং শাইনের বর্তমান দেনার পরিমাণ ৪২২ কোটি টাকা। তাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হলেও, কোম্পানিটি এখনও পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ করতে পারছে না এবং ক্ষতি কাটানোর অবস্থায় ফিরেনি।
ওয়াইজ স্টার টেক্সটাইল মিলসের সাথে চুক্তি বাতিল: রিং শাইন টেক্সটাইলের উদ্যোক্তাদের ১৯ কোটি শেয়ার অধিগ্রহণ করার কথা ছিল ওয়াইজ স্টার টেক্সটাইল মিলসের। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এই অধিগ্রহণের নীতিগত সম্মতি দিয়েছিল। ওয়াইজ স্টার রিং শাইনের ঋণ পরিশোধ করার বিনিময়ে শেয়ার অধিগ্রহণ করবে বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে, রিং শাইন ওয়াইজ স্টারের সাথে শেয়ার বিক্রয় চুক্তি বাতিল করেছে। রিং শাইন দাবি করেছে যে, ওয়াইজ স্টারের কার্যক্রম বিতর্কিত ছিল।
বিএসইসির ভূমিকা: বিএসইসি রিং শাইন টেক্সটাইলের ওপর নিরীক্ষা করে জানতে পেরেছে যে, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কোম্পানিটির মালিকানা হস্তান্তরের উদ্যোগ নেয় বিএসইসি এবং ওয়াইজ স্টারের সাথে চুক্তিও অনুমোদন করে। কিন্তু চুক্তি বাতিলের পর, বিএসইসি-র পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে সেটি এখন অপেক্ষার বিষয়।
ভবিষ্যৎ: রিং শাইন টেক্সটাইলের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। কোম্পানিটির ঋণের বোঝা, ক্রমহ্রাসমান লাভ এবং শেয়ার বিক্রয় চুক্তি বাতিলের ঘটনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। আরও তথ্য পাওয়ার সাথে সাথে এই প্রতিবেদন আপডেট করা হবে।