রায়ের বাজার

আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২:৩৮ এএম

রায়ের বাজার: ঢাকার ঐতিহাসিক ও বেদনাময় স্থান

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় অবস্থিত রায়ের বাজার ঐতিহাসিক ও বেদনাময় স্মৃতি ধারণ করে আছে। তুরাগ নদীর তীরে অবস্থিত এই এলাকাটি একসময় মৃৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল। লাল মাটির প্রাচুর্যের কারণে এখানে অনেক কুমোর বসতি স্থাপন করেছিল। মুঘল আমলে এটিকে ‘কুমারতলী’ বলা হত বলে জানা যায়।

ঔপনিবেশিক আমলে ১৯ শতকে রায়ের বাজারের বর্তমান রূপ ধারণ করে। কিন্তু রায়ের বাজার আজ বিখ্যাত একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বধ্যভূমি হিসেবে। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, লেখক, শিল্পীসহ অসংখ্য বুদ্ধিজীবীকে এখানে হত্যা করে। তাদের লাশ রায়ের বাজারের জলাভূমিতে ফেলে দেওয়া হয়।

এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি ধারণ করে রায়ের বাজার বধ্যভূমি। ১৯৯৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৯৯ সালে স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হয়। স্থাপত্যশিল্পী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও জামী আল শাফী স্মৃতিসৌধটির নকশা করেছিলেন। এটি লাল ইট দিয়ে নির্মিত, যার বাঁকা দেয়াল ১৯৭১ সালের সেই রক্তাক্ত ঘটনার স্মারক। স্মৃতিসৌধটি বর্তমানে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।

রায়ের বাজার বর্তমানে জনবহুল একটি এলাকা। মৃৎশিল্পের ঐতিহ্য কমে গেলেও আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। পুরোনো বস্তি ধ্বংস করে উঁচু আবাসন গড়ে উঠেছে। তবে হাজারিবাগ চর্মশিল্পাঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থানের কারণে এলাকাটি দূষণের সম্মুখীন। জনসংখ্যার চাপের কারণে পানি সংকটও দেখা দেয়।

মূল তথ্যাবলী:

  • রায়ের বাজার ঢাকার মোহাম্মদপুরে অবস্থিত।
  • একসময় মৃৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত ছিল।
  • ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত।
  • ১৯৯৯ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়।
  • বর্তমানে জনবহুল ও দূষণগ্রস্ত এলাকা।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।