রামগতি: লক্ষ্মীপুরের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার সদর শহর হল রামগতি। প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক দিক থেকে এটি উপজেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী, রামগতি শহরের জনসংখ্যা ছিল ৫৯,৮৩৭ জন। ২২°৩৫′২৪″ উত্তর ৯০°৫৯′৩৮″ পূর্ব অক্ষাংশে অবস্থিত এই শহর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯.৬৪ মিটার উঁচুতে অবস্থিত।
২০০০ সালে রামগতি পৌরসভা গঠিত হয়, যা ৯টি ওয়ার্ড এবং ১১টি মহল্লায় বিভক্ত। ৮২.৩৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের রামগতি শহরের ১১.৮১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পৌরসভা পরিচালনা করে। শহরের সাক্ষরতার হার ৪৭.৫%।
রামগতির অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, গম, মরিচ, পিঁয়াজ, সয়াবিন, চীনাবাদাম এখানকার প্রধান কৃষি ফসল। মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামারও এখানে উল্লেখযোগ্য। রাইস মিল, ফ্লাওয়ার মিল, স’মিল, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি, বিড়ি ফ্যাক্টরি সহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রয়েছে। ইলিশ মাছ, চিংড়ি, ধান, চীনাবাদাম, সয়াবিন, মরিচ রপ্তানির জন্য পরিচিত।
ঐতিহাসিক দিক থেকে, ১৮৬২ সালে রামগতি থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে তা উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জমিদার হাটের বাঁকে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। বেদারবক্স মসজিদ এবং রানী ভবানী কামদা মঠ রামগতির প্রাচীন নিদর্শন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আলেকজান্ডার সরকারি কলেজ, রামগতি আহমদিয়া কলেজ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
রামগতির অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সরকার ও বিভিন্ন এনজিও কাজ করে যাচ্ছে। তবে, স্যানিটেশন, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং পানীয় জলের সুবিধা উন্নয়নের জন্য আরও প্রচেষ্টা প্রয়োজন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকির কারণে এলাকার নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।