রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (BRUR): উত্তরবঙ্গের শিক্ষার এক আলোকিত দিগন্ত
২০০৮ সালের ১২ই অক্টোবর উত্তরবঙ্গের শিক্ষাঙ্গনে নতুন এক আলোর সূচনা হয়, যার নাম রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (BRUR)। প্রথমে ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে প্রতিষ্ঠিত হলেও, পরবর্তীতে নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। রংপুর শহরের পার্ক মোড় এলাকায় ৭৫ একর জমির উপর অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রাথমিক পর্যায়:
বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয় রংপুর শহরের ধাপ এলাকায় অবস্থিত সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে। ২০০৯ সালের ৪ঠা এপ্রিল মাত্র ৩০০ জন শিক্ষার্থী ও ১২ জন শিক্ষক নিয়ে একাডেমিক কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হয়। প্রথম উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান।
স্থায়ী ক্যাম্পাস ও বর্তমান অবস্থা:
২০১১ সালের ৮ই জানুয়ারি রংপুর ক্যাডেট কলেজ ও কারমাইকেল কলেজের নিকটবর্তী স্থায়ী ক্যাম্পাসে একাডেমিক কার্যক্রম স্থানান্তরিত হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদ এবং ২২টি বিভাগ রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮৫০০ এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২০০। ক্যাম্পাসে আছে তিনটি ছাত্রাবাস, একটি লাইব্রেরী, ক্যাফেটেরিয়া এবং মসজিদ। ৪০ হাজারেরও বেশি গাছের সৌন্দর্যে মনোরম পরিবেশে পরিপূর্ণ এই ক্যাম্পাসটি 'উত্তরের অক্সফোর্ড' হিসেবে পরিচিত।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি:
- অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমান (প্রথম উপাচার্য)
- অধ্যাপক ড. আবদুল জলিল মিয়া (দ্বিতীয় উপাচার্য)
- অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর উন নবী (তৃতীয় উপাচার্য)
- অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ (চতুর্থ উপাচার্য)
- অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী (পঞ্চম উপাচার্য)
অন্যান্য তথ্য:
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠন সক্রিয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গবেষণার উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এবং সেশন জট দূরীকরণেও কাজ করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা:
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা, মেডিকেল সেন্টার, গ্রন্থাগার এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা শিক্ষার্থীদের পাঠদান এবং গবেষণায় সহায়তা করে।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা:
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আধুনিক শিক্ষা এবং গবেষণার উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। আবাসিক সংকট সমাধান, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং শিক্ষক নিয়োগ বিষয়েও কাজ চলছে। আশা করা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টি ভবিষ্যতে দেশের শিক্ষাঙ্গনে আরও উল্লেখযোগ্য অবদান রক্ষা করবে।