জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া: সরকারি চাকরি আইনের সমালোচনা ও মতামত
উল্লেখ্যযোগ্য জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের প্রশাসন ব্যবস্থা ও সরকারি নীতিমালা পর্যালোচনায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। তার সাম্প্রতিক বক্তব্যগুলোতে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে তীব্র সমালোচনা এবং সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে।
তার মতে, সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ৩৯(১), ৪০, ৪১ ও ৪২(২) ধারা জনস্বার্থের পরিপন্থি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অতিমাত্রায় স্বাধীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ দিয়েছে। বিশেষ করে, ৩৯(১) ধারায় অপরাধ করে জেলে গেলেও অপরাধী কর্মচারীকে বরখাস্ত না করার বিধান রাখা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। এই ধারাটি বাংলাদেশ সার্ভিস রুলসের (বিএসআর) সাথে সাংঘর্ষিক বলে তিনি মনে করেন। ১৯৯১ সালে বিএসআর সংশোধনের জন্য গঠিত কমিটিতেও তিনি সদস্য ছিলেন।
ফিরোজ মিয়া এই আইনের ৪০ ধারার সমালোচনা করে বলেছেন, সরকারি কর্মচারীদের দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণের বিষয়ে যথেষ্ট কঠোর বিধান নেই। আইনের ৪১ ধারায় ফৌজদারি মামলায় কর্মচারীদের গ্রেফতারের আগে সরকারের অনুমতি নেওয়ার বিধান তিনি হাস্যকর বলে উল্লেখ করেছেন। ৪২(২) ধারা, যেখানে এক বছরের কম কারাদণ্ডে চাকরি যাবে না, সে বিষয়টিও তিনি জনস্বার্থের বিরুদ্ধে বলে মন্তব্য করেছেন।
মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া তার বক্তব্যে সরকারি চাকরি আইনে দুর্নীতি দমন ও জনস্বার্থ রক্ষার জন্য নির্দিষ্ট সংশোধনীর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। তার মতে, আইনে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে বরখাস্তের বিধান স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা জরুরি। এছাড়া, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করলে বরখাস্ত করার বিধান রাখা ও প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
তিনি প্রশাসন ও ২৫ ক্যাডার সরকারকে জিম্মি করে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেন এবং সরকারি কর্মচারীদের সংযত আচরণের আহ্বান জানান। তার মতে, ক্যাডার কর্মকর্তারা ট্রেড ইউনিয়ন নয় এবং আন্দোলনের মাধ্যমে জনসেবা বিঘ্নিত করার কোনো অধিকার তাদের নেই।
এই তথ্য উপর ভিত্তি করে বলা যায় মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া বাংলাদেশের জনপ্রশাসন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন এবং তার মতামত সরকারি নীতিমালা গঠনে প্রভাব ফেলতে পারে।