ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আরিফ: একটি বিতর্কিত ঘটনা
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) রমনার পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আরিফ একটি বিতর্কিত ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দুটি হত্যা মামলায় তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেন বলে অভিযোগ উঠে। এছাড়াও, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকেও অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগেই এই বিষয়টি ধরা পড়ে যায়। তিনি তার ডিবির পরিচয় গোপন করে নিউমার্কেট থানার পরিদর্শক পরিচয় দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়াই এ কাজটি করেছিলেন। এই ঘটনার পর তিনি অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে চলে যান। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ডিবি সূত্র জানায়, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জাহাঙ্গীর আরিফ দাবি করেছেন যে তিনি অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিনের নির্দেশে এই কাজ করেছেন। কিন্তু এডিসি সানজিদা এই দাবি অস্বীকার করেন এবং জানান, এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার এখতিয়ার তার নেই। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী এডিসি সানজিদার কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন, কিন্তু ডিএমপির কাছে ব্যাখ্যা সন্তোষজনক মনে হয়নি।
এই ঘটনায় ডিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক কর্তৃপক্ষকে জাহাঙ্গীর আরিফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন। সবুজ মিয়া ও মো. শাহজাহান মিয়া হত্যা মামলায় আনিসুল হক ও সালমানকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রচেষ্টা একটি বড় বিতর্কের জন্ম দেয় এবং মো. জাহাঙ্গীর আরিফের ভূমিকা গভীর তদন্তের আওতায় আসে। বর্তমানে এই চাঞ্চল্যকর দুটি মামলার তদন্ত নতুন কর্মকর্তা করছেন।