সবুজ মিয়া

সবুজ মিয়া: এক কিশোরের অকাল মৃত্যু ও অসমাপ্ত স্বপ্ন

শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের ১৮ বছর বয়সী কিশোর সবুজ মিয়া। এইচএসসি পরীক্ষার্থী সবুজ, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনে যোগদান করেন। মা সমেজা খাতুনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তিনি দেশের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত, আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি শহীদ হন।

সবুজ মিয়া শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়নের রূপারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি আজহার আলী (৫০) ও সমেজা খাতুন (৩৮) দম্পতির দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ চার সন্তানের দ্বিতীয় সন্তান ছিলেন। বোনের বিবাহের পর তার বাবা প্যারালাইজড হয়ে পড়েন। পরিবারের সকল দায়িত্ব সবুজের উপর চলে আসে। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি শ্রীবরদী উপজেলার লংগরপাড়া বাজারের একটি ফার্মেসিতে ৬০০০ টাকা বেতনে কাজ করে পরিবারের খরচ চালাতেন।

তার চাচাতো ভাই রাশেদুজ্জামান রিফাত জানান, এসএসসি পাশের পর অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তায় সবুজ ঢাকায় গিয়ে কাজ করেন এবং পরে শ্রীবরদী কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় ৪.৩৩ জিপিএ (এ গ্রেড) পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। সবুজের মা সমেজা খাতুন জানান, সবুজ তার মাকে খুব ভালোবাসতেন, কবিতা লিখতেন এবং দেশপ্রেমে উজ্জ্বল ছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল একজন বড় ব্যবসায়ী হওয়া।

সবুজের মৃত্যুর পর তার পরিবার অত্যন্ত দুর্দশার মধ্যে পড়ে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের ২ লাখ টাকা সহায়তা করেছে। সবুজের অকাল মৃত্যুতে পরিবার এবং এলাকার মানুষ গভীর শোকে নিমজ্জিত। তার মেধা, উদ্যম ও দেশপ্রেমের গল্প দীর্ঘদিন স্মৃতির পাতায় সজীব থাকবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৮ বছর বয়সী কিশোর সবুজ মিয়া ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হন।
  • তিনি শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার বাসিন্দা ছিলেন।
  • এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন (৪.৩৩ জিপিএ)।
  • পরিবারের অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করে পড়াশোনা করতেন।
  • তার মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকা গভীর শোকে নিমজ্জিত।

গণমাধ্যমে - সবুজ মিয়া

১৬ জুলাই ২০২৪, ৬:০০ এএম

সবুজ মিয়া ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহত হয়েছিলেন।