মুস্তাফিজ শফি: একজন অসাধারণ সাংবাদিক, লেখক ও কবি
মুস্তাফিজ শফি বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক এবং কবি। ১৯৭১ সালের ২০ জানুয়ারি সিলেটের বিয়ানীবাজারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পৈতৃক বাড়ি বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের আস্টসাঙ্গন গ্রামে। তিনি ১৯৮৭ সালে জলঢুপ দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৮৯ সালে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি, ১৯৯১ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ২০০০ সালে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
তার সাংবাদিকতা জীবন শুরু হয় ১৯৮৮ সালে সাপ্তাহিক সিলেট সংবাদ এবং লন্ডনের সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে। পরবর্তীতে তিনি দৈনিক লাল সবুজ, আজকের কাগজ, মানবজমিন, প্রথম আলো, আমার দেশ, সমকাল এবং কালের কণ্ঠসহ বেশ কিছু জাতীয় দৈনিকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের ১লা এপ্রিল তিনি রংধনু গ্রুপের প্রকাশিত দৈনিক ‘প্রতিদিনের বাংলাদেশ’ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন এবং ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৩ পত্রিকাটি থেকে পদত্যাগ করেন।
শুধু সাংবাদিকতা নয়, মুস্তাফিজ শফি সাহিত্যেও অসাধারণ অবদান রেখেছেন। তিনি একজন প্রতিভাবান কবি এবং বহু গ্রন্থের লেখক। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'পড় তোমার প্রেমিকার নামে', 'দহনের রাত', 'মধ্যবিত্ত কবিতাগুচ্ছ' ইত্যাদি। তিনি 'মুজিব কেন জরুরি', 'বহুমাত্রিক বঙ্গবন্ধু', এবং 'ভাষণ অথবা একটি কবিতার গল্প' নামক তিনটি গ্রন্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর সম্পাদনা করেছেন। এছাড়াও, তিনি 'চে' গ্রন্থে চে গুয়েভারার জীবনী ও রাজনীতিকে তুলে ধরেছেন। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলি হল 'ঈশ্বরের সন্তানেরা', 'জিন্দা লাশ অথবা রমেশ ডোম', এবং 'স্পর্শ'। শিশু সাহিত্যেও তিনি সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। 'ভূতকল্যাণ সমিতি' গ্রন্থের জন্য তিনি সিটি ব্যাংক-আনন্দআলো সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ‘একাত্তরের বিজয়িনী’ গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন মোবাইল ফোন অপারেটর রবির সম্মাননা।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় মুস্তাফিজ শফি জাতীয় পর্যায়ে বেশ কয়েকটি পুরষ্কার অর্জন করেছেন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, রোটারি ইন্টারন্যাশনাল, লায়ন্স ক্লাব এবং ইউনেস্কো ক্লাব মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড তার উল্লেখযোগ্য পুরষ্কারগুলির মধ্যে অন্যতম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে তার পুরস্কারপ্রাপ্ত একাধিক প্রতিবেদন পাঠদান করা হয়।