মাগুরা সদর উপজেলা: বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের মাগুরা জেলার অন্যতম প্রধান উপজেলা। প্রায় ৪০১.৫৮ বর্গ কিমি ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট এ উপজেলা উত্তরে শ্রীপুর ও ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলা, দক্ষিণে শালিখা উপজেলা, পূর্বে মহম্মদপুর ও ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলা এবং পশ্চিমে ঝিনাইদহ সদর ও শালিখা উপজেলায় ঘেরা। ১৯৮৩ সালে মাগুরা থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়, যদিও ১৮৪৫ সালে এর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল থানা হিসেবে। বর্তমানে এখানে ১টি পৌরসভা, ৯টি ওয়ার্ড, ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ, ২২৩টি মৌজা এবং ২৫২টি গ্রাম রয়েছে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব: মাগুরা সদর উপজেলার নীলকুঠি (ইছাখাদা), ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ (পারনান্দুয়ালী), পীর মোকাররম আলীর সমাধি (হাজীপুর) এবং সিদ্ধেশ্বরী মঠ (আঠারখাদা) সহ রাউতড়া গিরিধারী আশ্রম(রাউতড়া) উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় উপজেলাটি ৮ নং সেক্টরের অধীনে ছিল এবং পাকবাহিনীর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যার শিকার হয়েছিল। ইছাখাদা রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ (২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১) এর মতো ঐতিহাসিক ঘটনা এ উপজেলার ইতিহাসের অংশ। বিশ্ব রোড সংলগ্ন স্মৃতিসৌধ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধারণ করে রেখেছে।
শিক্ষা ও সংস্কৃতি: উপজেলায় ৫টি কলেজ, ৩২টি হাইস্কুল, ২টি মাদ্রাসা, ১০৫টি সরকারি এবং ৪২টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এবং ১টি কারিগরি ইনস্টিটিউট রয়েছে। সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ (১৯৪০), মাগুরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৫৪) উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মাগুরা মেডিকেল কলেজ (২০১৮) উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবায় অবদান রাখছে। সংস্কৃতির দিক থেকে মাগুরা জামে মসজিদ, ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদ, কালীবাড়ি মন্দির, ন্যাংটা বাবা আশ্রম (সাতধোয়া), হাজরাতলা মঠ ও মিশন এবং সিদ্ধেশ্বরী মঠ (দরিমাগুরা) উল্লেখযোগ্য।
অর্থনীতি: উপজেলার প্রধান অর্থনৈতিক উৎস কৃষি। চাষযোগ্য জমির পরিমাণ ২৭১৪০.৮০ হেক্টর। ধান, পাট, গম, সরিষা, ছোলা, মসুরি, আখ, শাকসবজি প্রধান কৃষি ফসল। আম, কাঁঠাল, কালোজাম, পেঁপে, বেল, বরই, কলা, নারিকেল উল্লেখযোগ্য ফল। ৩০টি হাটবাজার এবং ৮টি মেলা এ অঞ্চলের ব্যবসায়িক কার্যকলাপ সহায়ক। উল্লেখযোগ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের তথ্য সীমিত; আরও তথ্য পাওয়া গেলে আপডেট করা হবে।
জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থান: প্রায় ৩ লক্ষ জনসংখ্যা সম্পন্ন এ উপজেলা মাগুরা জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা। গড় সাক্ষরতার হার ৩০.৫% (পুরুষ ৪১.৬%, মহিলা ১৯.৪%)।