মাওলানা আব্দুল লতিফ নামটি একাধিক ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে আমরা বিভিন্ন মাওলানা আব্দুল লতিফ সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।
প্রথম মাওলানা আব্দুল লতিফ:
একজন বিশিষ্ট আলেম, তরীকতের মুর্শিদ এবং কোরআন তিলাওয়াতের শিক্ষক ছিলেন আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী। তার লেখা উর্দু ও আরবি গ্রন্থ ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন মাদ্রাসার পাঠ্যসূচিতে ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিভাগের পাঠ্যসূচিতেও তার গ্রন্থ স্থান পেয়েছিল। তিনি সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার ফুলতলী গ্রামে ১৯১৩ সালের প্রথম দিকে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল আব্দুল মজিদ এবং তিনি ছিলেন শাহ জালাল এর সফরসঙ্গী ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম শাহ কামাল-এর বংশধর।
শিক্ষাজীবনে তিনি তার চাচাতো ভাই ফাতির আলীর কাছে লেখাপড়া শুরু করে ফুলতলী মাদ্রাসায় ভর্তি হন। বদরপুর সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে রামপুর আলিয়া ও মাতলাউল উলুম মাদ্রাসায় হাদিস শাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ১৩৫৫ হিজরীতে মাতলাউল উলুম মাদ্রাসায় ১ম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে হাদিস শরীফের সর্বোচ্চ সনদ অর্জন করেন। তার গুরুদের মধ্যে আল্লামা খলিলুল্লাহ রামপুরী ও আল্লামা ওয়াজিহুদ্দীন রামপুরী উল্লেখযোগ্য। শাহ আব্দুর রউফ করমপুরী ও শায়খুল কুররা আহমদ হেজাযী এর কাছে থেকেও তিনি ইলমে কিরাতের সনদ অর্জন করেন। ১৯৪৬ সালে শায়খুল কূররার কাছে থেকে ইলমে কিরাতের সর্বোচ্চ সনদ লাভ করেন।
১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত বদরপুর আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। ১৯৫৪ সাল থেকে গাছবাড়ী জামেউল উলুম মাদ্রাসায় অধ্যাপনা, উপাধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। পরে সৎপুর কামিল মাদ্রাসা, ইছামতি ও বাদেদেওরাইল ফুলতলী আলিয়া মাদ্রাসায়ও হাদিস শাস্ত্র অধ্যাপনা করেন। তিনি দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন কোরআন তিলাওয়াতের শিক্ষার জন্য। দেশ-বিদেশে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। তরীকায়ে কাদেরিয়া, চিশতীয়া, নক্সবন্দীয়া, মুজাদ্দেদিয়া ও মুহাম্মদিয়ার মুর্শিদ ছিলেন। ২০০৮ সালের ১৬ জানুয়ারি সিলেটে তার মৃত্যু হয়।
দ্বিতীয় মাওলানা আব্দুল লতিফ (নেজামী):
ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান এবং নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী ২০১০ সালে ইন্তেকাল করেন। তিনি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় ছিলেন এবং দৈনিক সরকার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন।
তৃতীয় মাওলানা আব্দুল লতিফ:
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। তিনি ২০১০ সালে মারা যান।
চতুর্থ মাওলানা আব্দুল লতিফ:
একজন বিশিষ্ট আলেম ও ইসলামী চিন্তাবিদ ছিলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
উপরোক্ত তথ্যগুলি বিভিন্ন মাওলানা আব্দুল লতিফ এর উপর আলোকপাত করে। যদি কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, দয়া করে আরও স্পষ্ট তথ্য সরবরাহ করুন।