মরিয়ম: হিব্রু বাইবেল ও ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব
মরিয়ম, হিব্রু বাইবেলে (মিরিয়াম) মোশির বড় বোন এবং হারোণের বড় বোন হিসেবে পরিচিত। তিনি মোশির চেয়ে সাত বছর এবং হারোণের চেয়ে চার বছর বড় ছিলেন। যাত্রাপুস্তক অনুসারে, তিনি একজন ভাববাদী ছিলেন। মরিয়মের জন্ম এবং জীবনের সঠিক তারিখ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না, তবে যাত্রাপুস্তকের ঘটনাবলী থেকে অনুমান করা যায় যে তিনি খ্রিস্টপূর্ব ১৩০০-১২০০ এর দিকে জীবিত ছিলেন।
মরিয়মের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা:
- **মুসার রক্ষা:** ফারাওয়ের নির্দেশে সকল হিব্রু শিশুপুত্রকে হত্যা করা হচ্ছিল। মরিয়ম এবং তার মা তার নবজাত শিশু ভাই মুসাকে নীল নদীতে ভাসমান ঝুড়িতে রেখে জীবন রক্ষা করে। পরবর্তীতে ফারাওয়ের কন্যা মুসাকে উদ্ধার করেন।
- **আনন্দোৎসব:** লোহিত সাগর পারাপারের পর মরিয়ম আনন্দের সাথে গান গেয়ে এবং নৃত্য করেছিলেন।
- **মোশার সমর্থন ও বিরোধিতা:** মোশির কুশী স্ত্রীর বিরুদ্ধে তিনি ও হারোণ বিরোধিতা করেন। তবে মোশির নেতৃত্বকে সমর্থনও করেছিলেন।
- **ঈশ্বরের দয়া:** মরিয়মের অসুস্থতার পর মোশের প্রার্থনায় ঈশ্বর তাকে সুস্থ করেন।
ইসলামে মরিয়ম:
কুরআনে মরিয়মের গল্প বর্ণিত হয়েছে (সূরা মারইয়াম)। এখানেও তার মাতার আনুগত্য এবং মুসার জীবন রক্ষার কথা বলা হয়েছে। ইসলামে মরিয়ম একজন পবিত্র মহিলা হিসেবে সম্মানিত।
বিবি মরিয়ম মসজিদ ও মরিয়ম সালেহা মসজিদ:
বাংলাদেশে নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জে বিবি মরিয়ম মসজিদ এবং ঢাকার নীলক্ষেতের মরিয়ম সালেহা মসজিদ মরিয়ম নামে নামকরণ করা দুটি ঐতিহাসিক মসজিদ। এই মসজিদগুলির স্থাপত্য ও ইতিহাসের সাথে মরিয়ম নামের ব্যক্তির কোনো সরাসরি সম্পর্ক না থাকলেও, নামের সাদৃশ্য এই মসজিদ গুলির সাথে মরিয়মের গল্প জড়িয়ে আছে।
উপসংহার:
হিব্রু বাইবেল এবং ইসলাম উভয় ধর্মেই মরিয়ম একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তার ভাই মোশা এবং হারোণের সাথে তার জীবন এবং অবদান ধর্মীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।