মদুনাঘাট

আপডেট: ৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৪১ পিএম

মদুনাঘাট: বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ

চট্টগ্রামের মদুনাঘাট, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সাথে জড়িত হওয়ার কারণে দেশের মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে। এটি দেশের প্রথম ৪০০ কেভি ক্ষমতাসম্পন্ন জিআইএস (Gas Insulated Switchgear) গ্রিড সাবস্টেশন, যা উচ্চ ক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ও সঞ্চালনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মদুনাঘাট গ্রিড সাবস্টেশন:

এই আধুনিক সাবস্টেশনটি ২০২৪ সালের জুন মাসে পুরোদমে চালু হয়। এর 2100 মেগাওয়াট ক্ষমতা রয়েছে। এটি জাপানি প্রযুক্তিতে নির্মিত এবং কক্সবাজারের মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাঁশখালী এসএস পাওয়ারের উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের জন্য নির্মিত হয়েছে। আগে লোড রাখার সক্ষমতা কম থাকায় চট্টগ্রামের জন্য যথেষ্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব ছিল না, কিন্তু মদুনাঘাট গ্রিড সাবস্টেশন চালু হওয়ার পর এখন চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। মাতারবাড়ি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের ৮০০ মেগাওয়াট এবং বাঁশখালী এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ মদুনাঘাট হয়ে মেঘনাঘাট জাতীয় গ্রিড সাবস্টেশনে পৌঁছায়।

নির্মাণ ও প্রযুক্তি:

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) এই সাবস্টেশনটি নির্মাণ করেছে। এর আগে দেশে ৪০০ কেভি ক্ষমতার গ্রিড সাবস্টেশন ছিল, কিন্তু সেগুলো এয়ার ইনস্যুলেটেড সুইচগিয়ার (এআইএস) প্রযুক্তির ছিল, যার জন্য বেশি ভূমি প্রয়োজন হয়। মদুনাঘাট সাবস্টেশন গ্যাস ইনস্যুলেটেড সুইচগিয়ার (জিআইএস) প্রযুক্তিতে নির্মিত হওয়ায় এটি আরো দক্ষ ও ভূমি সাশ্রয়ী। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল পিজিসিবি জাপানের হিটাচি করপোরেশন ও চীনের ইটার্ন-এর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করে।

সমস্যা ও সমাধান:

২০২২ সালে মদুনাঘাট গ্রিড সাবস্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সংস্কার কাজে কিছু সময় লেগেছে। এই সময়কালে, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরাসরি মেঘনাঘাট গ্রিড সাবস্টেশনে সরবরাহ করা হতো। তবে, ২০২৪ সালের জুনে সংস্কার কাজ শেষ হয়ে সাবস্টেশনটি পুরোপুরি চালু হয়। এই সাবস্টেশনটিতে ত্রুটির কারণে, ২০২৪ সালের ২২ আগস্ট গভীর রাতে চট্টগ্রাম নগরীতে এক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

ভবিষ্যতে মহেশখালী অঞ্চল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ঢাকা ও চট্টগ্রামে সরবরাহের জন্য ভুলতা থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত ৭৬৫ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) বৈদেশিক ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

মদুনাঘাট গ্রিড সাবস্টেশন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আরও তথ্য পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদনটি আপডেট করা হবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • মদুনাঘাটে দেশের প্রথম ৪০০ কেভি জিআইএস গ্রিড সাবস্টেশন স্থাপিত হয়েছে।
  • মাতারবাড়ি ও বাঁশখালী বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের জন্য এই সাবস্টেশন গুরুত্বপূর্ণ।
  • এই সাবস্টেশনটি জাপানি প্রযুক্তিতে নির্মিত।
  • ২০২২ সালে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ২০২৪ সালের জুনে পুনরায় চালু করা হয়।
  • মদুনাঘাট সাবস্টেশনে ত্রুটির কারণে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম নগরীতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা ঘটে।
  • ভবিষ্যতে মহেশখালী থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৭৬৫ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - মদুনাঘাট

জানুয়ারী, ২০২৫

চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের প্রশস্তকরণের কাজের অংশ।