বেন স্টোকস: ইংল্যান্ড ক্রিকেটের এক অসাধারণ অলরাউন্ডার
বেঞ্জামিন অ্যান্ড্রু "বেন" স্টোকস, ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের একজন অবিশ্বাস্যভাবে প্রতিভাবান অলরাউন্ডার। ৪ঠা জুন, ১৯৯১ সালে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে জন্মগ্রহণকারী এই ক্রিকেট তারকা ১২ বছর বয়সে উত্তর ইংল্যান্ডে চলে আসেন এবং সেখানেই তার ক্রিকেট জীবনের যাত্রা শুরু হয়। ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম পেস বোলার হিসেবে স্টোকসের অবদান ইংল্যান্ড ক্রিকেটের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
স্টোকসের পিতা, জেরার্ড স্টোকস, একজন রাগবি লিগ খেলোয়াড় এবং কোচ ছিলেন। ককেরমাউথ ক্রিকেট ক্লাব মাঠে স্টোকসের জুনিয়র ক্রিকেট জীবন শুরু হয়। ২০০৯ সালে ডারহামের হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়। তার প্রথম বলেই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মার্ক রামপ্রকাশকে আউট করে তিনি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারপর অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়েও তিনি উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেন, বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিরুদ্ধে অর্ধশতক ও ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিরুদ্ধে শতরান করেন।
২০১১ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার বোলিংয়ে কিছুটা লড়াই করতে হয়, যদিও সেমি-ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চমৎকার বোলিং করেন। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ওভারে কার্লোস ব্রাদওয়েটের চারটি ছক্কার মুখোমুখি হন।
২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিজয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন স্টোকস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অসাধারণ অলরাউন্ড পারফর্মেন্সের জন্য ম্যাচ সেরা হন এবং অ্যান্ডিল ফেহলাকওয়াইওর ক্যাচটি সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্যাচ হিসাবে বিবেচিত হয়। ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৪ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচটি টাই করে এবং সুপার ওভারে অবদান রেখে বিশ্বকাপ জয়ের পথ সুগম করেন।
২০১৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজে হেডিংলিতে তার ১৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস ইংল্যান্ডের জয়ের অন্যতম কারণ। এই ইনিংস সর্বকালের অন্যতম সেরা ইনিংস হিসেবে স্মরণ করা হয়।
২০১৭ সালে ব্রিস্টলে মাতাল অবস্থায় মারামারিতে জড়িয়ে বিতর্কের মুখে পড়েন স্টোকস। এই ঘটনা তার খেলোয়াড়ী জীবনে কালো ছায়া ফেলে। তবে তিনি বহুবার নিজেকে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন একজন অসাধারণ ক্রিকেটার। তার ক্রিকেট দক্ষতা ও অলরাউন্ড পারফর্মেন্স ইংল্যান্ড ক্রিকেটের ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে।