বৃষ্টি: জীবনদাতা, ধ্বংসাত্মক - দুই রূপে প্রকৃতির অপরিহার্য উপাদান
বৃষ্টি, পৃথিবীর জীবনচক্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আকাশ থেকে পৃথিবীতে পড়া এই তরল পদার্থ জীববৈচিত্র্যের ধারণ, কৃষিকাজ, এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যকলাপের জন্য অপরিহার্য। কিন্তু বৃষ্টির প্রকোপও কম নয়। অতিবৃষ্টির ফলে বন্যা, ভূমিধ্বস, ফসলের ক্ষতি, এবং জনজীবনে বিশাল ব্যাঘাত ঘটে।
জলীয় বাষ্পের ঘনীভবন থেকে বৃষ্টির সৃষ্টি হয়। আবহাওয়ার পরিবর্তন, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ, এবং উষ্ণতা বৃষ্টির পরিমাণ ও ধরণ নির্ধারণ করে। বৃষ্টিপাতের পরিমাপ মিলিমিটারে করা হয় এবং হালকা, ভারি, অতি ভারি ও চরম বৃষ্টিপাতের শ্রেণীবিভাগ করা হয়।
কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে বৃষ্টির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়। মার্কিন বিজ্ঞানী ভিনসেন্ট শায়েফার প্রথম কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের ধারণা দেন এবং বরফের টুকরো (ড্রাই আইস) ব্যবহার করে তিনি তুলোর মতো মেঘ তৈরি করতে সক্ষম হন। সিলভার আয়োডাইড এবং ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড-এর মতো রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি করা হয়। চীন কৃত্রিম বৃষ্টিপাতে অন্যতম অগ্রণী দেশ। ২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকের সময় বৃষ্টি রোধ করার জন্যও এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল।
কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের বিরূপ প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। বেইজিংয়ের প্রতিবেশী অঞ্চলগুলিতে জলীয় বাষ্পের ঘাটতির অভিযোগ ওঠে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সাথে এর সম্পর্কও নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বৃষ্টি, প্রকৃতির এক অপরিহার্য উপাদান, যা জীবন দান করে, কিন্তু ধ্বংসাত্মক প্রভাবও ফেলতে পারে। বৃষ্টিপাত ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।