প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন
৭ই অক্টোবর, ২০২৩, শনিবার-এই ঐতিহাসিক দিনে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অত্যাধুনিক তৃতীয় টার্মিনালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টার্মিনাল বাংলাদেশের বিমান পরিবহন ব্যবস্থাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০ টার দিকে বিমানবন্দরে পৌঁছে নতুন টার্মিনালের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন। তিনি চেক-ইন কাউন্টার, ইমিগ্রেশন কাউন্টার, এবং সিকিউরিটি চেকপয়েন্ট পরিদর্শন করেন এবং টার্মিনালের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে কর্মকর্তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে নেন। পরে দুপুর ১২ টার কিছু পরে তিনি ডিজিটাল বাটন চেপে টার্মিনালটির উদ্বোধন করেন। এই অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, এবং জাপান সরকারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, এই টার্মিনালটি বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন হাব হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি কক্সবাজার ও ঢাকার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহনের হাব হিসেবে গড়ে তোলার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কথাও উল্লেখ করেন।
তৃতীয় টার্মিনালটির বিশাল আকার ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা উল্লেখযোগ্য। দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের বিশাল ফ্লোর স্পেস, ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন ডেস্ক, এবং ৫৯টি আগমন ইমিগ্রেশন ডেস্ক রয়েছে। বোর্ডিং ব্রিজের সংখ্যা ১২টি (আরও ১৪টি যুক্ত হবে পরবর্তীতে), এবং ৩৭টি এয়ারক্রাফ্ট পার্কিংয়ের সুবিধা রয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-এর অর্থায়নে সম্পন্ন হয়েছে। এই টার্মিনাল পুরোপুরি চালু হলে বাংলাদেশের বার্ষিক যাত্রী ধারণ ক্ষমতা দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়াবে।
তৃতীয় টার্মিনালটি বিমানবন্দরে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গেও যুক্ত হবে। এটি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভূগর্ভস্থ রেলপথ (এমআরটি-৫), এবং একটি ভূগর্ভস্থ টানেলের মাধ্যমে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকেও একটি টানেলের মাধ্যমে যাত্রীরা টার্মিনালে যেতে পারবে।
বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী যে, এই টার্মিনাল বাংলাদেশের বিমান পরিবহন খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে যাত্রী সেবার মান বজায় রাখা ও টার্মিনালের দক্ষতার সাথে ব্যবহার নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।