বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি): বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের এক অগ্রণী প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) বাংলাদেশের একমাত্র জাতীয় ক্রীড়া শিক্ষাকেন্দ্র। ঢাকার অদূরে সাভারের জিরানিতে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি ১৪ এপ্রিল ১৯৮৬ সালে ৩০ জন ফুটবল ও ৬০ জন হকি খেলোয়াড় নিয়ে যাত্রা শুরু করে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টস (বিআইএস) নামে ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি সংস্থা হিসেবে বিকেএসপি নাম গ্রহণ করে। ১৯৮৩ সালে এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বিকেএসপির মূল শিক্ষা কার্যক্রম উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পরিচালিত হয়। তবে স্নাতক (পাস) এবং ক্রীড়া বিজ্ঞানে বিভিন্ন ডিপ্লোমা কোর্সও এখানে পড়ানো হয়। বর্তমানে বিকেএসপিতে ২১টি ক্রীড়া বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, শ্যুটিং, আর্চারি, জুডো, উশু, তায়কোয়ান্দো, অ্যাথলেটিকস, বাস্কেটবল, সাঁতার, জিমন্যাস্টিকস, বক্সিং, টেনিস, ভলিবল, কারাতে, টেবিল টেনিস, কাবাডি, ব্যাডমিন্টন, ভারোত্তলন ও স্কোয়াশ। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হয়, তবে বিশেষ ক্রীড়া যোগ্যতাসম্পন্ন খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে বয়স ও উচ্চতা শিথিল করা হয়।
বিকেএসপিতে ভর্তির জন্য প্রাথমিক বাছাই, সাত দিনের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প, ব্যবহারিক পরীক্ষা এবং লিখিত পরীক্ষা (বাংলা, ইংরেজি ও গণিত) সম্পন্ন করতে হয়। মূল্যায়নে শারীরিক যোগ্যতা ও ক্রীড়া নৈপুণ্য ৭০%, ক্রীড়াবিজ্ঞান-সংক্রান্ত ব্যবহারিক পরীক্ষা ১০% এবং লিখিত পরীক্ষা ২০% গুরুত্ব পায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় স্নাতক (পাস) এবং ক্রীড়া বিজ্ঞানের বিভিন্ন ডিপ্লোমা কোর্সেও শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে।
বিকেএসপি দেশজুড়ে ট্যালেন্ট হান্ট কার্যক্রম পরিচালনা করে সেরা খেলোয়াড়দের খুঁজে বের করে তাদের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের সুযোগ প্রদান করে। সাভারের প্রধান কেন্দ্র ছাড়াও চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, কক্সবাজার, রাজশাহী ও দিনাজপুরে রয়েছে বিকেএসপির আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ময়মনসিংহে একটি কেন্দ্র সম্প্রসারণের অপেক্ষায় রয়েছে। বিকেএসপি বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে বলে আশা করা যায়।