ঢাকার বিআরটি: এক দীর্ঘ প্রতীক্ষার অধ্যায়
ঢাকার যানজটের সমাধানের লক্ষ্যে ২০০৫ সালে শুরু হওয়া বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্প বহুবিধ চ্যালেঞ্জ ও বিলম্বের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। প্রকল্পটির উদ্বোধন আগামী ১৬ ডিসেম্বর করার কথা থাকলেও, কিছু কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। বিআরটির উদ্বোধনের মাধ্যমে গাজীপুর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস চলাচল শুরু হবে।
প্রকল্পের ইতিহাস ও সময়সীমা:
২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর একনেক এই প্রকল্প অনুমোদন করে। প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, কিন্তু বারবার সময়সীমা ও ব্যয় বৃদ্ধির পর এখন সেটা ৪ হাজার ২৬৪ কোটি টাকার বেশি। ২০১৬ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, বিভিন্ন কারণে প্রকল্পটি বারবার বিলম্বিত হয়েছে। এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রকল্পের ক্ষতিও হয়েছে।
প্রাথমিক উদ্বোধন ও পরিকল্পনা:
প্রাথমিকভাবে ১০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বাস দিয়ে গাজীপুর শিববাড়ী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এই সেবা চালু করা হবে। বিমানবন্দর থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ভাড়া ৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য পর্যায়ক্রমে বাকি কাজ সম্পন্ন করা এবং বিআরটি লেনে আরও বেশি বাস চালু করা।
সংশ্লিষ্ট সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ:
এই প্রকল্পের সাথে জড়িত রয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি এবং বেসিস। মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান (সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা), মো. এহছানুল হক (সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব), মো. তাজুল ইসলাম (বিআরটিসির চেয়ারম্যান), এবং মো. ইয়াসীন (বিআরটিএ চেয়ারম্যান) প্রকল্পের সাথে গুরুত্বপূর্ণভাবে জড়িত।
চ্যালেঞ্জ ও সমালোচনা:
বিআরটি প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণাধীন থাকার কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনাও ঘটেছে। প্রকল্পের অব্যবস্থাপনা ও সময়সীমা অতিক্রম নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। কিছু সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, বিআরটি চালু হলেও যানজট ও অন্যান্য সমস্যা সম্পূর্ণরূপে সমাধান হবে না।
বিআরটি-এর বৈশিষ্ট্য:
বিআরটি প্রকল্পের লক্ষ্য হলো ঢাকার যানজট কমানো। এটি ডেডিকেটেড লেন, অফ বোর্ড ভাড়া সংগ্রহ, উন্নত স্টেশন, এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বাস ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত ও দক্ষ পরিবহন ব্যবস্থা স্থাপন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আমরা ভবিষ্যতে প্রকল্পের উন্নয়ন এবং প্রভাব নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করব।