বাউল রহমত শাহ

আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮:২৫ এএম

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম: এক অমর কণ্ঠস্বর

বাংলাদেশের লোকসংগীতের ইতিহাসে শাহ আব্দুল করিম এক অমর নাম। তিনি ছিলেন একজন কিংবদন্তি বাউল, সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার এবং সঙ্গীত শিক্ষক। তার অসামান্য অবদানের জন্য তাকে ‘বাউল সম্রাট’ হিসেবে সম্বোধন করা হয়। তার জীবন ও কর্ম বাংলা সংস্কৃতির ধারায় সুন্দর ও অনন্য অবদান রেখে গেছে।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:

১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলায় ইব্রাহিম আলী ও নাইওরজানের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন শাহ আব্দুল করিম। তার শৈশব ও কিশোরকাল কেটেছে দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে। তিনি খুব কম বয়সেই বাউল সঙ্গীতের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করেন এবং বাউল শাহ ইব্রাহিম মাস্তান বকসসহ অন্যান্য গুরুদের কাছে তালিম নেন।

সঙ্গীত জীবন ও দর্শন:

শাহ আব্দুল করিম প্রায় পাঁচশোরও বেশি গান রচনা করেছেন। তার গানে প্রেম, বিরহ, বিচ্ছেদ, ভক্তি, দেহতত্ত্ব, সামাজিক বৈষম্য, মানবাধিকারের কথা প্রকাশিত হয়েছে। তার সঙ্গীত শুধুমাত্র বিনোদনের নয়, অনেকগুলো গান ছিলো সমাজ সংস্কারের প্রচারক। তিনি বাউল ধর্ম ও দর্শনকে নতুন করে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার গানে লোকজ উপাদান ও আধ্যাত্মিকতার সুন্দর মিশ্রণ লক্ষণীয়। ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ, দুদ্দু শাহ সহ অনেক প্রখ্যাত বাউলের প্রভাবে তিনি তার গানে নতুনত্ব যোগ করেছিলেন।

স্বীকৃতি ও সম্মাননা:

তার অসামান্য অবদানের জন্য ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একুশে পদক পুরস্কারে ভূষিত হন। তার গানগুলো বাংলা একাডেমি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছে। তার জীবনী ও কর্ম নিয়ে অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে। শাকুর মজিদ তার জীবনী নিয়ে ‘ভাটির পুরুষ’ নামে একটি প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করেছেন।

মৃত্যু:

২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সিলেটে শাহ আব্দুল করিম মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে বাংলা সংস্কৃতি গভীরভাবে বিমর্ষ হয়ে পড়ে।

শাহ আব্দুল করিমের উত্তরাধিকার:

শাহ আব্দুল করিমের গান আজও মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছে। তার সঙ্গীত ও দর্শন নতুন প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি ছিলেন একজন মহান মানবতাবাদী, যিনি তার সঙ্গীতের মাধ্যমে সমাজকে সত্য ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতি প্রেরণা জুগিয়ে গেছেন।

বাউল শাহ আব্দুল করিম

• বাংলাদেশের কিংবদন্তি বাউল গায়ক শাহ আব্দুল করিম।

• ২০০১ সালে একুশে পদক লাভ করেন।

• ৫০০ এর বেশি গান রচনা করেছেন।

• বাউল সংগীত ও দর্শনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

বাংলাদেশের কিংবদন্তি বাউল গায়ক শাহ আব্দুল করিমের জীবনী, কর্ম, ও উত্তরাধিকার নিয়ে একটি বিস্তারিত লেখা।

বাংলা একাডেমি

শাহ আব্দুল করিম, ইব্রাহিম আলী, নাইওরজান, শাহ ইব্রাহিম মাস্তান বকস, ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ, দুদ্দু শাহ, শাকুর মজিদ

সিলেট, সুনামগঞ্জ, দিরাই, উজানধল

বাউল, শাহ আব্দুল করিম, বাংলাদেশী সঙ্গীত, লোকসংগীত, একুশে পদক, বাউল সংগীত, আধ্যাত্মিক সংগীত

মূল তথ্যাবলী:

  • বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জন্ম ১৯১৬ সালে।
  • তিনি ৫০০ টিরও বেশি গান রচনা করেছেন।
  • তাকে ২০০১ সালে একুশে পদক প্রদান করা হয়।
  • তার গান ভাটি অঞ্চলের জীবন ও সংগ্রামের প্রতিফলন।
  • শাহ আব্দুল করিম ২০০৯ সালে মারা যান।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - বাউল রহমত শাহ

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

বাউল রহমত শাহ ‘জলরঙের ফড়িং’ নামক ওয়েবফিল্মের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

বাউল রহমত শাহ ওয়েবফিল্মের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।