শাকুর মজিদ: একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী
শাকুর মজিদ (জন্ম: ২২ নভেম্বর, ১৯৬৫) একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী স্থপতি, নাট্যকার, তথ্যচিত্র নির্মাতা, চিত্রগ্রাহক এবং লেখক। তার ভ্রমণকাহিনী ও জীবনী সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। শুধু সাহিত্যেই নয়, স্থাপত্য, নাটক রচনা এবং চিত্র নির্মাণেও তিনি সমানভাবে সফল।
১৯৬৫ সালের ২২ নভেম্বর সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা গ্রামে আবদুল মজিদ ও ফরিদা খাতুন দম্পতির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন শাকুর মজিদ। মাথিউরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন (১৯৮২ ও ১৯৮৪)। পরবর্তীতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্থাপত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন (১৯৯৩)। ছাত্রজীবনেই তিনি কয়েকটি সংবাদপত্রে সাংবাদিকতায় জড়িত ছিলেন।
মাত্র ২০ বছর বয়সে সিলেট বেতারে 'যে যাহা করোরে বান্দা আপনার লাগিয়া' নাটকের মাধ্যমে নাট্যকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। 'লন্ডনী কইন্যা' সহ অনেক প্রশংসিত টেলিভিশন নাটক তিনি রচনা করেছেন। টেলিভিশন নাটকের পাশাপাশি তিনি মঞ্চনাটকও লিখেছেন। ১৯৯৩ সালে তিনি আরও দুজন স্থপতিকে নিয়ে 'ট্রায়াঙ্গেল কনসাল্ট্যান্ট' নামে একটি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি 'ট্রাই-স্পেস লিমিটেড', 'ব্রিটানিয়া প্রপার্টিজ লিমিটেড', 'ভিউ ফাইন্ডার' প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৪ সাল থেকে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবেও কর্মরত আছেন।
শাকুর মজিদ অসংখ্য ভ্রমণকাহিনী ও জীবনীমূলক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'আমিরাতে তেরোরাত', 'আমেরিকা: কাছের মানুষ দূরের মানুষ', 'কালাপানি', 'হো চি মিনের দেশে', 'হুমায়ূন আহমেদ: যে ছিলো এক মুগ্ধকর' ইত্যাদি। তিনি 'মহাজনের নাও', 'হাছনজানের রাজা' সহ কয়েকটি মঞ্চনাটকও রচনা করেছেন। 'রিদম অন দ্যা স্টেজ' নামে একটি আলোকচিত্র গ্রন্থ ও তার রয়েছে। তার 'ফেরাউনের গ্রাম' বইয়ের জন্য তিনি 'আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার ২০১৬' পেয়েছেন।
ডাঃ হোসনে আরা জলির সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ শাকুর মজিদ ঢাকায় তাঁর স্ত্রী ও দুই পুত্রসহ বসবাস করেন। একজন বহুমুখী প্রতিভার ধারক শাকুর মজিদ বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন।