বাংলাদেশি

বাংলাদেশী: পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য

বাংলাদেশী শব্দটি দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ দেশের নাগরিকদের বোঝায়। এরা মূলত বাঙালি, যদিও কিছুসংখ্যক উপজাতি জনগোষ্ঠীও রয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে, দেশের নাগরিকরা 'বাংলাদেশী' নামে পরিচিত। এই পরিচয়টি কেবলমাত্র বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে বসবাসকারীদের জন্য নয়, বরং বিশ্বের যেকোনো স্থানে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্যও প্রযোজ্য।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:

১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর, বাংলাদেশ (তখন পূর্ব পাকিস্তান) পাকিস্তানের অংশ হয়ে ওঠে। এই সময়কালে বাঙালিরা তাদের ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এই সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে এবং 'বাংলাদেশী' পরিচয়টি একটি স্বতন্ত্র জাতীয় পরিচয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

ভাষা ও সংস্কৃতি:

বাংলাদেশের প্রায় ৯৯% মানুষের মাতৃভাষা বাংলা। বাংলা ভাষা বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা ও জাতীয় ভাষা। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারী উপজাতি জনগোষ্ঠী তাদের নিজস্ব ভাষা ব্যবহার করে। বাংলাদেশে চাঁটগাঁইয়া, সিলেটি, চাকমা, মারমা, রাখাইন, ওড়াওঁ, ককবরক, মৈতৈ, হাজং, ম্রো, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী, কোল, তঞ্চৈঙ্গা, খাসি, কুরুক্স, রোহিঙ্গা, মিজো, আটং, পাংখো, ইত্যাদি সহ বিভিন্ন ভাষা প্রচলিত। এথনোলগের ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ৪১টি ভাষার অস্তিত্ব উল্লেখ করা হয়েছে।

অর্থনীতি ও সমাজ:

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ, যার অর্থনীতি প্রধানত কৃষি, গার্মেন্টস, এবং প্রেরিত অর্থের উপর নির্ভরশীল। দেশটি ব্যাপক জনসংখ্যা বৃদ্ধির সম্মুখীন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জসমূহ বাংলাদেশের সামনে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।

উপসংহার:

বাংলাদেশী শব্দটি একটি জাতীয় পরিচয়, যা ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভৌগোলিক অবস্থান, এবং ঐক্যবদ্ধ জাতিসত্তার প্রতিনিধিত্ব করে। এই পরিচয়টি বাংলাদেশের জনগণের ঐক্য ও গর্বের প্রতীক।

মূল তথ্যাবলী:

  • বাংলাদেশের নাগরিকদের 'বাংলাদেশী' বলা হয়।
  • ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।
  • বাংলা বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা।
  • বাংলাদেশে ৪১টিরও বেশি ভাষা প্রচলিত।
  • বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ।