বন্ধ্যত্ব

বাংলাদেশে বন্ধ্যত্ব একটি ব্যাপক জনস্বাস্থ্য সমস্যা, যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক দুই দিকেই প্রভাব ফেলে। ২০২২ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতি হাজারে স্থূল জন্মহার ১৯.৩ এবং মোট প্রজননহার (টিএফআর) ২.১৫। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, এক বছর ধরে নিয়মিত যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেও গর্ভধারণ না হলে তাকে বন্ধ্যত্ব বলে। WHO-এর ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রায় ৪ কোটি ৯০ লাখ দম্পতি বন্ধ্যত্বে ভোগেন। বন্ধ্যত্বকে প্রাইমারি (কখনো গর্ভধারণ হয়নি) ও সেকেন্ডারি (আগে গর্ভধারণ হয়েছে কিন্তু পরে আর হয়নি) দুই ভাগে ভাগ করা যায়। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে বন্ধ্যত্বের প্রতিকার উপেক্ষিত হয় কারণ জনসংখ্যা বৃদ্ধির চিন্তা বেশি থাকে। তবে প্রজনন স্বাস্থ্য একটি মানবাধিকার, যেখানে ব্যক্তি বা দম্পতি স্বাধীনভাবে সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDG) এর লক্ষ্য ৩ (সুস্বাস্থ্য ও সুসম্পদ), ৫ (লিঙ্গ সমতা) এবং ১০ (অসমতা হ্রাস) এর সাথে বন্ধ্যত্বের সরাসরি সম্পর্ক আছে। বাংলাদেশে বন্ধ্যত্বের ওপর পর্যাপ্ত গবেষণা নেই। সরকারি হাসপাতালে বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা পর্যাপ্ত নয়, যদিও ৮০-৯০% ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসাই যথেষ্ট। অ্যাডভান্সিং সেক্সুয়াল অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ অ্যান্ড রাইটস (অ্যাডসার্চ)-এর একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ২৯৪৮ জন নারীর মধ্যে ০.৯% প্রাইমারি ও ৯% সেকেন্ডারি বন্ধ্যত্বে ভুগছেন। বেসরকারি কেন্দ্রে বেশি চিকিৎসা নেওয়া হয়। বন্ধ্যত্বের কারণে পারিবারিক ও সামাজিক নিগ্রহের শিকার হয়, নারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বন্ধ্যত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও চিকিৎসার ব্যবস্থা উন্নত করার প্রয়োজন। বন্ধ্যত্বকে অপরাধ বা পাপ হিসেবে না দেখে যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

মূল তথ্যাবলী:

  • বাংলাদেশে বন্ধ্যত্ব একটি ব্যাপক জনস্বাস্থ্য সমস্যা
  • বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী বন্ধ্যত্ব
  • প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি বন্ধ্যত্বের ধরণ
  • বন্ধ্যত্বের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব
  • বাংলাদেশে বন্ধ্যত্বের উপর গবেষণা ও চিকিৎসার অভাব
  • সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন