ফুলগাজী, ফেনী: বাংলাদেশের ফেনী জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। ফেনী জেলার উত্তরাংশে অবস্থিত এই উপজেলা উত্তরে পরশুরাম উপজেলা, দক্ষিণে ফেনী সদর ও ছাগলনাইয়া উপজেলা এবং পূর্ব-পশ্চিমে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তে অবস্থিত। ২৭ মার্চ ২০০২ সালে পরশুরাম উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন (ফুলগাজী, মুন্সীরহাট, দরবারপুর, আনন্দপুর, আমজাদহাট ও জিএমহাট) নিয়ে ফুলগাজী উপজেলা গঠিত হয়। ৪ জুন ২০০২ সালে বাংলাদেশ গেজেটে উপজেলাটির নাম ঘোষণা করা হয়। ১৪ অক্টোবর ২০০২ সালে জনাব মোঃ মশিউর রহমান প্রথম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। ৫ নভেম্বর ২০০২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী উপজেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। জনশ্রুতি অনুযায়ী, এলাকার একজন গুণী ব্যক্তি ফুলগাজী মজুমদারের নামানুসারে উপজেলার নামকরণ করা হয়।
ভৌগোলিক অবস্থান:
উপজেলার আয়তন প্রায় ১০২.১৯ বর্গ কিলোমিটার। ভারতের ত্রিপুরা সীমান্তের দূরত্ব পশ্চিমে প্রায় ৫.৫০ কিমি এবং পূর্বে প্রায় ৮.৫০ কিমি।
জনসংখ্যা:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, উপজেলার মোট জনসংখ্যা ছিল ১১৯,৫৫৮ জন; যার মধ্যে পুরুষ ৫৯,৪৯৭ জন এবং মহিলা ৬০,০৬১ জন।
অর্থনীতি:
উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স উপজেলার অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।
শিক্ষা:
উপজেলার শিক্ষার হার ৫৭.১৬%। ফুলগাজী সরকারি কলেজ, খালেদা জিয়া মহিলা কলেজ, মুন্সিরহাট আলী আজ্জম উচ্চ বিদ্যালয়, জি এম হাট উচ্চ বিদ্যালয় প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
ফুলগাজী উপজেলা মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ নং সেক্টরের আওতাধীন ছিল। ১০ জুন ১৯৭১ সালে বন্দুয়া সেতুতে ৫০ জন পাকিস্তানি সেনা মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে নিহত হয়েছিল। ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। উপজেলায় একটি বধ্যভূমি এবং ৫টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়া, উপজেলায় বহু রাজনীতিবিদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং গণ্যমান্য ব্যক্তির জন্মস্থান।
যোগাযোগ:
উপজেলায় পাকা, আধাপাকা এবং কাঁচা রাস্তার সমন্বয়ে একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে।