জাতীয় প্রেসক্লাব: বাংলাদেশের সাংবাদিকদের এক অমূল্য সম্পদ
জাতীয় প্রেসক্লাব বাংলাদেশের সাংবাদিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এটি কেবল সাংবাদিকদের একটি সামাজিক ও বিনোদন কেন্দ্র নয়, বরং বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা ও মতবিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ পীঠস্থান। ১৯৫৪ সালের ২০ অক্টোবর পূর্ব পাকিস্তান প্রেসক্লাব হিসেবে যাত্রা শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানটি। প্রথমে ১৮ তোপখানা রোডের একটি সরকারি লাল ভবনে এর অবস্থান ছিল, যেখানে একসময় বিখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু বাস করতেন। ১৯৭৯ সালে বর্তমান অবস্থানে এর নতুন ভবন নির্মিত হয়।
প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠার পেছনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের অবদান রয়েছে। মুজীবুর রহমান খাঁ প্রথম সভাপতি, জহুর হোসেন চৌধুরী প্রথম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পি.এম. বালান, খায়রুল কবির, সৈয়দ নূরুদ্দিন, সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন, আব্দুস সালাম প্রমুখ এর উদ্যোক্তা ছিলেন। দীর্ঘ ইতিহাসে প্রেসক্লাব বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাথে জড়িত। ১৯৬৪ সালের দাঙ্গাবিরোধী মিছিল, ১৯৬৭ সালে রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধ ঘোষণার প্রতিবাদ, স্বাধীনতা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন সবকিছুতেই প্রেসক্লাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী প্রেসক্লাব ভবনে মর্টারশেল নিক্ষেপ করেছিল।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাব দুটি অডিটোরিয়াম, ভিআইপি লাউঞ্জ, ক্যান্টিন, টিভি কক্ষ, অতিথিশালা এবং কম্পিউটার সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারসহ একটি আধুনিক ও উন্নত প্রতিষ্ঠান। এটি কেবল সাংবাদিকদের জন্যই নয়, দেশের গণতন্ত্র ও সংবাদ স্বাধীনতার জন্যও অপরিহার্য।