পেকুয়া: কক্সবাজারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা
পেকুয়া উপজেলা কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। ১৩৯.৬১ বর্গ কিমি আয়তনের এই উপজেলার অবস্থান ২১°৪৩´ থেকে ২১°৫৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৩´ থেকে ৯২°০২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে। উত্তরে বাঁশখালী, দক্ষিণে মহেশখালী ও চকোরিয়া, পূর্বে চকোরিয়া এবং পশ্চিমে কুতুবদিয়া চ্যানেল এর সীমানা। ২০০২ সালের ২৩ এপ্রিল চকোরিয়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন (উজানটিয়া, পেকুয়া, টৈটং, মগনামা, রাজাখালী, বড়বাকিয়া, শিলখালী) নিয়ে পেকুয়া উপজেলা গঠিত হয়।
- *জনসংখ্যা ও জনগোষ্ঠী:** ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী পেকুয়ার জনসংখ্যা ১৭১৫৩৮ জন; পুরুষ ৮৬৩১০ জন এবং মহিলা ৮৫২২৮ জন। এখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান প্রভৃতি ধর্মের মানুষ বসবাস করেন। মগ, রোয়াই প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপস্থিতিও উল্লেখযোগ্য।
- *অর্থনীতি:** কৃষি পেকুয়ার অর্থনীতির মূল ভিত্তি। ধান, আলু, সরিষা, মরিচ, আখ, গম, চীনাবাদাম, পান, শাকসবজি ইত্যাদি প্রধান কৃষি ফসল। আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা ইত্যাদি ফল-ফলাদিও উৎপাদিত হয়। মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামারও রয়েছে। লবণ শিল্প, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, স্বর্ণশিল্প, লৌহশিল্প, কাঠের কাজ ইত্যাদি কুটিরশিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চিংড়ি, লবণ, চীনাবাদাম, মাছ, পান, শাকসবজি প্রধান রপ্তানি দ্রব্য।
- *শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:** পেকুয়ায় কলেজ, কারিগরি কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, এতিমখানা প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিক্ষার হার ৩৫.৩%। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, হাসপাতাল ইত্যাদি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
- *প্রাকৃতিক দুর্যোগ:** পেকুয়া ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। ১৯৯১ এবং ১৯৯৭ সালে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়।
- *মুক্তিযুদ্ধ:** পেকুয়ায় পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। তবে পেকুয়ার মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অন্যত্র যুদ্ধ করেছেন, যেমন চট্টগ্রামের দোহাজারীর জামিজুরি এলাকায়।
- *উল্লেখযোগ্য স্থান:** কুতুবদিয়া চ্যানেল ও মাতামুহুরী নদী উল্লেখযোগ্য জলাশয়। রাজাখালী আলেক শাহ বাজার ও পেকুয়া হাট গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজার।