বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পেঁয়াজের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মসলা ও সবজি হিসেবে দেশের প্রতিটি রান্নাঘরেই ব্যবহৃত হয়। দেশের পেঁয়াজ চাষীরা, যারা ছোটো-বড়ো কৃষি প্রতিষ্ঠান, স্বতন্ত্র কৃষক, এবং কৃষি সমবায় সমিতি—সকলেই মিলিতভাবে দেশের পেঁয়াজ চাহিদা পূরণে অবদান রাখেন। তবে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এই কম উৎপাদনের কারণ বিভিন্ন রোগ-বালাই, পোকামাকড়ের আক্রমণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, এবং উন্নত চাষাবাদের অভাব। দেশের পেঁয়াজ চাষীরা এই সমস্যাগুলির সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
পেঁয়াজ চাষের জন্য উর্বর বেলে-দো-আঁশ মাটি উত্তম। বর্ষাকালে চাষের জন্য উঁচু জমি প্রয়োজন যেখানে বৃষ্টির পানি জমে না। বারি পেঁয়াজ-১, বারি পেঁয়াজ-২, বারি পেঁয়াজ-৩, বারি পেঁয়াজ-৪, এবং বারি পেঁয়াজ-৫ সহ বিভিন্ন উন্নত জাতের পেঁয়াজের চাষ দেশে করা হয়। ভালো বীজ নির্বাচন, সঠিক সার প্রয়োগ, পোকা-মাকড় এবং রোগ-বালাই দমন, এবং সময়মতো ফসল সংগ্রহ পেঁয়াজ চাষের ফলন বাড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
পেঁয়াজ চাষীদের সাফল্যের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়মিত নেওয়া হয়। এই উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ, কৃষি প্রশিক্ষণ, সহজ ঋণ সুবিধা, এবং বাজারজাতকরণে সহায়তা। তবে পেঁয়াজ চাষীদের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলি পরিহার করা এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য আরও আধুনিক প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অবলম্বন করা প্রয়োজন। তাহলেই দেশের পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ এবং পেঁয়াজ চাষীদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি সাধন সম্ভব হবে।