পূর্ব চীন সাগর: একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রের বর্ণনা
পূর্ব চীন সাগর প্রশান্ত মহাসাগরের একটি প্রান্তিক সাগর, চীনের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। এর আয়তন প্রায় ১২,৪৯,০০০ বর্গ কিলোমিটার (৪,৮২,০০০ বর্গ মাইল)। কিউশু এবং রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জ এর পূর্ব ও দক্ষিণ সীমানা নির্ধারণ করে, যখন পশ্চিমে এশীয় মহাদেশ এবং উত্তরে ইয়েলো সি অবস্থিত। কোরিয়া প্রণালীর মাধ্যমে এটি জাপান সাগরের সাথে সংযুক্ত।
এই সমুদ্রের সীমান্তবর্তী দেশগুলো হল দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, তাইওয়ান এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীন। চীনা সাহিত্যে একে ‘ডংহাই’ (পূর্ব সাগর) বলা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে জাপান একে ‘ইস্ট সিনা সাগর’ বলে ডাকত। ২০০৪ সাল থেকে জাপান ‘ইস্ট চাইনা সি’ নামটি ব্যবহার করছে। ইন্দোনেশিয়ায় ২০১৪ সাল পর্যন্ত ‘লাউট চিনা তিমুর’ (পূর্ব চীন সাগর) নামটি ব্যবহার করা হতো।
১৮৪৯ থেকে ১৮৯২ সালের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখানে তিমি শিকার করত। তবে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, জাপান, এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইইজেড) নিয়ে বিরোধ রয়েছে। চীন ও জাপানের মধ্যে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু ১৯৮২ সালের জাতিসংঘের সমুদ্র আইন সংক্রান্ত কনভেনশন (UNCLOS)। উভয় দেশই ২০০ নটিক্যাল মাইল ইইজেড দাবি করে, কিন্তু সমুদ্রের প্রস্থ মাত্র ৩৬০ নটিক্যাল মাইল। চীন মহাদেশীয় বালুচর প্রসারের দাবী করে, যার ফলে ইইজেড ওকিনাওয়া ট্রাফ পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ার কথা।
১৯৯৫ সালে চীন চুনক্সিয়াও গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করে, যা চীনা ইইজেড-এর মধ্যে অবস্থিত। জাপান এর সাথে অন্যান্য সম্ভাব্য গ্যাস ভাণ্ডার যুক্ত থাকার কথা বিশ্বাস করে। চীনের প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনের বিষয়টি নিয়ে উভয় দেশের ইইজেড ওভারল্যাপের কারণে বিতর্ক চলে আসছে। পূর্ব চীন সাগরের Xihu Sag এলাকায় (Canxue, Baoyunting, Chunxiao, Duanqiao, Wuyunting, এবং Tianwaitian) প্রাকৃতিক গ্যাসের ৩৬৪ বিসিএফ প্রমাণিত মজুত রয়েছে বলে অনুমান করা হয়। ২০০৬ সালে বাণিজ্যিক উত্তোলন শুরু হয়। ২০০৮ সালে যৌথ উত্তোলনের জন্য চুক্তি হয়, কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি।
দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা নিয়েও চীন ও জাপানের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে Socotra Rock নিয়েও বিতর্ক রয়েছে, যেখানে দক্ষিণ কোরিয়া Ieodo Ocean Research Station নির্মাণ করেছে। সম্ভবত, পূর্ব চীন সাগর (চীনা ভাষায় ডংহাই) নক্ষত্র Eta Serpentis এর সাথে সম্পর্কিত। এই সমুদ্রের বিতর্কিত অঞ্চলগুলোতে অবস্থিত সম্পদ ও সামরিক উপস্থিতির কারণে পূর্ব চীন সাগর আন্তর্জাতিক গুরুত্ব বহন করে। আরও তথ্য পাওয়া গেলে আমরা এই নিবন্ধটি আপডেট করব।