পীর সাহেব চরমোনাই নামটি দুই ব্যক্তির সাথে সম্পর্কিত। প্রথমজন হলেন মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ইসহাক (১৯১৫-১৯৭৭), যিনি চরমোনাইয়ের প্রথম পীর ছিলেন এবং দ্বিতীয় পীর তার পুত্র মাওলানা সৈয়দ ফজলুল করিমের মৃত্যুর পর অনুসারীদের মাঝে 'দাদা হুজুর' নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি বরিশাল শহরের কীর্তনখোলা নদীর পূর্বপাড়ে অবস্থিত পশুরীকাঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং কুরআন-হাদীসের শিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তীতে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় স্থানীয়ভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। তিনি ২৭টি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
দ্বিতীয় পীর সাহেব চরমোনাই হলেন সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম (জন্ম: ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১), যিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দ্বিতীয় আমীর। তিনি চরমোনাই ইউনিয়নের দুই মেয়াদে চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া ইসলামিয়া থেকে শিক্ষাজীবনের সূচনা করেন এবং বরিশালের সাগরদী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ফিকহ ও হাদিসে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। তিনি জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ায়ও পড়াশোনা করেছেন। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি চরমোনাই জামিয়া রশিদিয়া ইসলামিয়ার আলিয়া শাখার শিক্ষক এবং দীর্ঘদিন আলিয়া ও কওমি উভয় শাখার সহকারী অধ্যক্ষ ছিলেন। বর্তমানে তিনি উভয় শাখার প্রধান পৃষ্ঠপোষক, বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের সভাপতি এবং বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি। তিনি ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের সাথেও জড়িত ছিলেন। ২০০৬ সালে তার পিতা সৈয়দ ফজলুল করিমের মৃত্যুর পর তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির আমীর নির্বাচিত হন।