পাথুম নিশাঙ্কা সিলভা: শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট অঙ্গনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র
শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট জগতে পাথুম নিশাঙ্কা সিলভার নাম অমর হয়ে থাকবে। ১৮ মে ১৯৯৮ সালে গালেতে জন্ম নেওয়া এই প্রতিভাবান ক্রিকেটার ২০২১ সালের মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর থেকেই তার অসাধারণ পারফর্মেন্স দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন। দেশের হয়ে তিনি টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সব ধরণের ক্রিকেট খেলেছেন।
শৈশবে দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে ওঠা পাথুম কালুতারা বিদ্যালয় এবং পরে ইসিপাথানা কলেজ, কলম্বোতে পড়াশোনা করেন। স্কুল ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি অপরাজিত ২০৫ রান করে দর্শকদের বিস্মিত করেন। তার ক্রিকেট জীবনের প্রারম্ভ হয় কালুতারা বিদ্যালয় থেকে। এরপর তিনি ইসিপাথানা কলেজ, কলম্বোতে যান। তার অভাবী পরিবারে পিতা সুনীল সিলভা মাটি খোঁড়ার কাজ করতেন আর মাতা কালুতারা মন্দিরের কাছে ফুল বিক্রি করে সংসার চালাতেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার অভিষেকের পর থেকে তিনি একের পর এক সাফল্য অর্জন করে যাচ্ছেন। ২০২১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেকেই শতরান করেন এবং দ্রুততম ৫০০ ও ১০০০ রানের মাইলফলক অর্জন করেন। তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কারণে তিনি দ্রুতই শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট দলের স্থায়ী ওপেনার হিসেবে জায়গা করে নেন। ২০২২ সালের এশিয়া কাপে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ জয়ী অংশীদারিত্ব গড়েছিলেন। তিনি ওয়ানডেতে একাধিকবার অর্ধশতক ও শতরান করেছেন। তার একাধিক বীরত্বপূর্ণ পারফর্মেন্স শ্রীলঙ্কাকে জয় এনে দিয়েছে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের তার অসাধারণ পারফর্মেন্সে তিনি উইজডেনের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সেরা দলেও স্থান পান।
কিন্তু পাথুমের সবচেয়ে বড় সাফল্য হল ২০২৪ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে তার অপরাজিত ২১০ রানের ইনিংস। এটি শ্রীলঙ্কার ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। তিনি এতে ১৩৯ বলে ২০টি চার ও ৮টি ছক্কা মেরে এই অসাধারণ কীর্তি অর্জন করেন।
এছাড়াও, তিনি একাধিক ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অর্ধশতক এবং শতরান করেছেন। তার দ্রুততম ২০০০ ওয়ানডে রান করার রেকর্ড আছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচে তিনি একটি দুর্দান্ত শতরান করে দলকে জয় এনে দেন। পাথুম নিশাঙ্কা শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এবং তার দুর্দান্ত প্রতিভা ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে স্থায়ী স্থান পেয়েছে।