বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত বেশ কিছু পাখি অভয়াশ্রম রয়েছে। এই শব্দটির অর্থ নির্দিষ্ট কোনো একটি স্থান নয় বরং পাখির সংরক্ষণের জন্য উৎসর্গীকৃত বিভিন্ন এলাকা বা অভয়ারণ্যকে বোঝায়। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পাখি অভয়াশ্রমের বিবরণ দেওয়া হলো:
১. কুরমা পাখি অভয়াশ্রম, মৌলভীবাজার: ঢাকা থেকে ২০৬ কিমি এবং শ্রীমঙ্গল থেকে ৩০ কিমি দূরে কমলগঞ্জ উপজেলায় কুরমা চা বাগানের ছনবাড়ী এলাকায় অবস্থিত। এটি মাত্র এক একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। একসময় এখানে ৭৫-৮০ প্রজাতির পাখি ছিল, কিন্তু চা বাগানের সম্প্রসারণের ফলে এর পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে ‘স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এন্ডেজার্ড ওয়াইল্ডলাইফ’ নামক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, মৌলভীবাজার বন বিভাগ ও পাখিবিশেষজ্ঞদের সহায়তায় এটিকে পাখি অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে এখানে পাখির সংখ্যা কমে গেছে।
২. পাবলাখালী বিল, খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার কবাখালী ইউনিয়নের পাবলাখালী বিল কৃপাপুর এলাকায় তামাক চাষ না থাকায় পাখিদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে পরিণত হয়েছে। এখানে সাদা বক, শালিক, দোয়েল, টুনটুনি, ফিঙে এবং অন্যান্য পরিযায়ী পাখি দেখা যায়। স্থানীয়দের উদ্যোগে পাখি শিকার বন্ধ থাকার কারণে পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৩. সারুটিয়া ঝিল, পাবনা: পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার সারুটিয়া গ্রামের রেললাইনের পাশের ঝিলে হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পাখি আশ্রয় নিয়েছে। গ্রামবাসীদের উদ্যোগে এখানে পাখিদের জন্য নিরাপদ আবাস ও খাদ্যের ব্যবস্থা রয়েছে। এটি প্রাকৃতিকভাবেই একটি অভয়াশ্রমের আকার ধারণ করেছে।
৪. আগৈলঝাড়া, বরিশাল: বরিশালের আগৈলঝাড়ার পয়সারহাট গ্রামের আব্দুর রশিদ মিয়ার বাড়ি পাখিদের আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত। সরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই এটি একটি জনসাধারণের উদ্যোগে গড়ে ওঠা পাখি অভয়াশ্রম।
উল্লেখ্য, উপরোক্ত পাখি অভয়াশ্রম ছাড়াও বাংলাদেশে আরও অনেক স্থান রয়েছে যেখানে পাখিরা আশ্রয় নেয়। এই তথ্যগুলো আপডেট হতে পারে, আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য আমরা পরে আপনাদের জানাবো।