পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ: গণতন্ত্রের ধারক
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ (উর্দু: قومی اسمبلی), দেশটির দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের নিম্নকক্ষ। উর্ধ্বকক্ষ হলো সিনেট। ইসলামাবাদের সংসদ ভবনে এটির অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ৩৪২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত জাতীয় পরিষদ, যেখানে ২৭২ জন সদস্য সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়, এবং ৭০টি আসন নারী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত। প্রত্যেক জাতীয় পরিষদের মেয়াদ পাঁচ বছর। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে একে বিলুপ্ত করতে পারেন, কিন্তু একাই বিলুপ্ত করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির নেই।
ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিত:
১৯৪৭ সালের ১০ আগস্ট করাচির সিন্ধু বিধানসভা ভবনে পাকিস্তানের প্রথম গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ সর্বসম্মতিক্রমে গণপরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হয়।
১৯৭৩ সালের সংবিধানে পাকিস্তানের সংসদীয় গণতন্ত্রের কাঠামো স্থাপিত হয়, যেখানে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের আনুষ্ঠানিক প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী সরকারপ্রধান। জাতীয় পরিষদ ফেডারেল আইনসভার তালিকাভুক্ত বিষয় ও সমবর্তী তালিকাভুক্ত বিষয়ের জন্য আইন তৈরি করে। এটি সরকারের তদারকিও করে বিতর্ক, স্থগিত গতিবিধি, প্রশ্নোত্তর আদি মাধ্যমে।
গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা:
- বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পরিষদ নির্বাচন এবং বিভিন্ন সরকারের গঠন এবং পতন।
- ১৯৭৩ সালের সংবিধান গ্রহণ এবং পরবর্তী সংশোধনী।
- বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভূমিকা এবং প্রভাব।
- বর্তমানে কাজ করছে পাকিস্তানের ১৬ তম জাতীয় পরিষদ।
কাঠামো ও কার্যক্রম:
জাতীয় পরিষদের সদস্যরা সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকারের অধীনে নির্বাচিত হন। স্পিকার জাতীয় পরিষদের সভাপতি, যিনি ডেপুটি স্পিকারের সহায়তায় কাজ করেন। সংবিধান জাতীয় পরিষদ বিভিন্ন কমিটির মাধ্যমে সরকার তদারকির ব্যবস্থা করেছে।
অন্যান্য তথ্য:
- জাতীয় পরিষদের অধিবেশনগুলো বিভক্ত ।
- সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা দেয় না।
- জাতীয় পরিষদ আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ধারণ করে।
উপসংহার:
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ দেশটির গণতন্ত্রের একটি মূল স্তম্ভ। এটির কার্যক্রম দেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।