পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা: একটি বিস্তারিত ঝলক
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ভারতের পূর্বাঞ্চলের একটি ঐতিহাসিক ও জনবহুল অঞ্চল। কলকাতার উত্তর ও উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এই জেলাটির ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির এক অপূর্ব মিশেলে সমৃদ্ধ। ১৯৮৬ সালের ১ মার্চ, বৃহত্তর ২৪ পরগনা জেলাকে দুটি ভাগে ভাগ করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা গঠিত হয়।
ইতিহাস:
মুঘল আমল থেকেই ২৪ পরগনা অঞ্চলের অস্তিত্ব ছিল। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পর নবাব মীরজাফর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ২৪টি পরগনার জমিদারি দান করেন। পরবর্তীকালে এই অঞ্চল ব্রিটিশদের অধীনে আসে। ১৮১৪ সালে একটি আলাদা জেলা হিসেবে এর গঠন হয়। ১৯৮৬ সালে উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা দুটি পৃথক জেলায় বিভক্ত হয়। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সূচনা এই জেলার ব্যারাকপুর থেকেই হয়েছিল।
ভূগোল:
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র ডেল্টা অঞ্চলে অবস্থিত। হুগলি নদী এর পশ্চিম সীমান্তে প্রবাহিত। ইচ্ছামতি, যমুনা, বিদ্যাধরীসহ অন্যান্য নদীও এই জেলায় প্রবাহিত। সমভূমি অধ্যুষিত এই জেলায় কোন উচ্চভূমি নেই।
জনসংখ্যা:
২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনার জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি। এটি পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে জনবহুল জেলা।
অর্থনীতি:
কৃষি, মৎস্য, এবং অন্যান্য কৃষিকর্ম এই জেলার অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি। ধান, গম, পাট, ইক্ষু প্রভৃতি ফসল উৎপাদিত হয়। কলকাতার তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র বিধাননগর (সল্টলেক) এই জেলাতেই অবস্থিত। অনেক বহুজাতিক কোম্পানির অফিস এখানে অবস্থিত।
পর্যটন:
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ঐতিহাসিক স্থান, ধর্মীয় স্থান এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির, ব্যারাকপুরের ঐতিহাসিক সেনানিবাস, বিভূতিভূষণ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, টাকি, প্রভৃতি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান।
সংস্কৃতি:
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সংস্কৃতি বহুবর্ণিল। কালীপূজা, দুর্গাপূজা, জগদ্ধাত্রী পূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব উৎসাহের সাথে পালিত হয়।
যোগাযোগ:
রেল, সড়ক ও আকাশপথে উত্তর ২৪ পরগনা ভালোভাবেই যুক্ত। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দমদমে অবস্থিত।
আমরা আশা করি এই সংক্ষিপ্ত লেখাটি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সম্পর্কে একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করতে পেরেছে। আরো বিস্তারিত তথ্যের জন্য আমরা আপনাকে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইট পরিদর্শন করার জন্য অনুরোধ করছি।