পরিসংখ্যান ভবন: বাংলাদেশের পরিসংখ্যানের হৃদস্পন্দন
ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত পরিসংখ্যান ভবন বাংলাদেশের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর সদর দপ্তর। এটি কেবলমাত্র একটি ভবন নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য তথ্য ও পরিসংখ্যানের উৎস। ১৯৭৪ সালের ২৬ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদূরপ্রসারী দৃষ্টিতে ৪টি পরিসংখ্যান সংস্থাকে একীভূত করে বিবিএস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পরিসংখ্যান ভবনের যাত্রা শুরু হয়। তখন থেকেই এটি দেশের জনসংখ্যা, কৃষি, শিল্প, অর্থনীতি, জনমিতি ও নানা আর্থসামাজিক বিষয়ের উপাত্ত সংগ্রহ, পরিসংখ্যান প্রস্তুত, প্রকাশ ও বিশ্লেষণ করে আসছে।
পরিসংখ্যান ভবন দেশের সকল পরিসংখ্যানগত কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে বিভিন্ন জরিপ ও শুমারির তথ্য সংগ্রহ, সংকলন এবং প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। এই তথ্যগুলো দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা, নীতি নির্ধারণ, গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহৃত হয়। বিবিএস-এর আটটি উইং এখানেই অবস্থিত যারা বিভিন্ন খাতের (কৃষি, শিল্প, জনসংখ্যা, জাতীয় হিসাব ইত্যাদি) উপাত্ত ব্যবস্থাপনা করে। বিবিএস জনগণের তথ্যের চাহিদা পূরণে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সকল প্রতিবেদনের ভার্চুয়্যাল কপি (সফট কপি) ও হার্ডকপি উভয় মাধ্যমেই তথ্য প্রদান করে থাকে।
২০১৩ সালের পরিসংখ্যান আইন পাশের মাধ্যমে বিবিএস আরও সুসংহত এবং আইনগত ভিত্তি প্রাপ্ত হয়। এই আইন জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থাপনাকে আরও সুদৃঢ় করেছে এবং পরিসংখ্যান ভবনের ভূমিকাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করেছে।
পরিসংখ্যান ভবনের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও মূল্যায়নের জন্য অপরিহার্য তথ্য প্রদান করে। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বুঝতে এবং সঠিক নীতি নির্ধারণের জন্য এই ভবনের অবদান অনস্বীকার্য। তাই পরিসংখ্যান ভবন কেবলমাত্র একটি ভবন নয়, বরং এটি বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতিফলন।