পদ্মা সেতু এলাকা: বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও অর্থনৈতিক মাইলফলক
পদ্মা সেতু, বা পদ্মা বহুমুখী সেতু, বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী প্রকল্প। এটি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংকে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলার সাথে সংযুক্ত করেছে। ২০২২ সালের ২৫শে জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করেন। ৬.১৫ কিমি দীর্ঘ এই সেতুটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু এবং বিশ্বের অন্যতম গভীরতম পাইলযুক্ত সেতু।
ইতিহাস: ১৯৭১ সালে জাপানি জরিপ বিশেষজ্ঞদের একটি প্রতিবেদনে পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রকল্পের প্রস্তাব করে। ২০০১ সালে শেখ হাসিনা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০৯ সালে নকশা প্রণয়ন ও ভূমি অধিগ্রহণ শুরু হয়। দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক প্রকল্প থেকে সরে আসলে, বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৪ সালে চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপের সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য: পদ্মা সেতু দুই স্তর বিশিষ্ট। উপরের স্তরে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরে একটি রেলপথ রয়েছে। সেতুর নির্মাণে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। ৪১টি স্প্যান এবং ৪২টি পিলার নিয়ে তৈরি এই সেতুটি ১২০ মিটার গভীর পাইলে স্থাপিত।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব: পদ্মা সেতু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি ঢাকার সাথে ২৩টি জেলার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেছে। প্রকল্পটি দেশের পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন বৃদ্ধি করবে এবং দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়তা করবে।
সামাজিক প্রভাব: পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নত করবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সামাজিক সেবাগুলিতে সহজতর অ্যাক্সেস নিশ্চিত করবে।
উপসংহার: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক বিকাশের একটি প্রতীক। এটি দেশের জনগণের জন্য একটি গর্বের বিষয়।