নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ড: বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষার প্রসারে নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ডের অবদান অপরিসীম। ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত এই বোর্ডটি কুরআন শিক্ষার নূরানী পদ্ধতির মাধ্যমে দেশব্যাপী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। বোর্ডটির প্রধান লক্ষ্য হলো প্রত্যেক মুসলমান এবং তাদের সন্তানদেরকে বিশুদ্ধ কুরআন, ইসলামী দ্বীনি তাহযীব, তামাদ্দুন সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করা, সঠিক আক্বীদা এবং দ্বীনি শিক্ষার প্রচার ও প্রসার করা, এবং কুরআন-হাদীস, মাসায়েল এবং যুগোপযোগী বাংলা, গণিত, ইংরেজি শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ডের কার্যক্রম সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে বিস্তৃত। বোর্ডটির অধীনে দেশের বিভিন্ন স্থানে নূরানী তালীমুল কুরআন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি মাদ্রাসায় নির্দিষ্ট পাঠ্যসূচী অনুযায়ী শিক্ষাদান করা হয়। বোর্ড নিজস্ব পাঠ্যবই প্রকাশ করে এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে।
বোর্ডের কার্যক্রমে জড়িত রয়েছে প্রশিক্ষক, পরিদর্শক, অফিস কর্মকর্তা, এবং বই বিক্রয় কেন্দ্রের কর্মকর্তা। নূরানী পদ্ধতির প্রবর্তক পীরে কামেল জনাব হযরত মাও. ক্বারী বেলায়েত হুসাইন সাহেব (রহ.) এর অবদান এই প্রতিষ্ঠানের সফলতায় অপরিসীম। তাঁর গবেষণা এবং অভিজ্ঞতার আলোকে নূরানী পদ্ধতি এবং পাঠ্যসূচী প্রণীত হয়েছে।
নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ডের শিক্ষা কার্যক্রম শুধুমাত্র কুরআন তিলাওয়াত ও ইসলামী শিক্ষায় সীমাবদ্ধ নয়। এটি বাংলা, ইংরেজি ও গণিত শিক্ষার ব্যবস্থাও করে। এই বোর্ডের প্রতিষ্ঠার ফলে দেশের হাজার হাজার শিশু কুরআন শিক্ষা লাভ করেছে এবং অনেক শিক্ষক কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে।
বোর্ডের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে আরও বেশি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা, শিক্ষার মান উন্নত করা এবং আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে শিক্ষা কার্যক্রম আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া। নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ডের অবদান বাংলাদেশের ইসলামী শিক্ষার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।