দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নারীর কর্মসংস্থানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারীদের শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেলে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য অঞ্চলটি আরও উন্মুক্ত হলে দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি সম্ভব। শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ পুরুষের সমান হলে আঞ্চলিক জিডিপি প্রায় ৫১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণের হার মাত্র ৩২ শতাংশ, যেখানে পুরুষের হার ৭৭ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রিয়েসের মতে, নারীদের শ্রমশক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মূল নীতিগত সংস্কার প্রয়োজন। বিবাহের পরে নারীদের কর্মসংস্থানের হার ১২ শতাংশ কমে যায়। পোশাক শিল্পে নারীর অংশগ্রহণ ৪৩ শতাংশে উন্নীত হলেও, একই কাজের জন্য পুরুষের তুলনায় নারীরা মাত্র ৬০ শতাংশ মজুরি পান। মেকেন্সি গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের গবেষণা অনুসারে, নারী-পুরুষের বৈষম্য কমানো গেলে আগামী অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার জিডিপিতে অতিরিক্ত তিন দশমিক সাত ট্রিলিয়ন ডলার যোগ হতে পারে। বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রান্সিসকা ওনজোগের মতে, নারীর কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য সরকার, বেসরকারি খাত, সামাজিক সম্প্রদায় এবং পরিবারের উদ্যোগ প্রয়োজন। দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশ বিশ্ব বাণিজ্য ও বিনিয়োগে কম উন্মুক্ত, যা নারীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টিতে বাধা সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে বন্যা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমেছে। ভুটানের পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধার এবং ভারতের কৃষি ও শিল্পের বৃদ্ধি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। নারীদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য আইনি সংস্কার, চাকরির সুযোগ সৃষ্টি, বাধা দূরীকরণ এবং সামাজিক নীতির উন্নয়ন প্রয়োজন।
নারীর কর্মসংস্থান
মূল তথ্যাবলী:
- দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নারীর কর্মসংস্থানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
- নারীদের শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার মাত্র ৩২%
- শ্রমশক্তিতে নারী-পুরুষের সমতা আঞ্চলিক জিডিপি ৫১% বাড়াতে পারে
- নারী-পুরুষের মজুরির বৈষম্য
- নারীর কর্মসংস্থান বাড়াতে সরকার, বেসরকারি খাত ও সামাজিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ প্রয়োজন