খাজা নাজিমউদ্দীন: পাকিস্তানের দ্বিতীয় গভর্নর জেনারেল ও দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী
খাজা নাজিমউদ্দীন (১৯ জুলাই ১৮৯৪ - ২২ অক্টোবর ১৯৬৪) ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি রাজনীতিবিদ। ঢাকার নবাব পরিবারে জন্মগ্রহণকারী নাজিমউদ্দীন নিখিল ভারত মুসলিম লীগের একজন মুখ্য নেতা ছিলেন এবং দুইবার বাংলার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তানের সৃষ্টির পর, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর মৃত্যুর পর তিনি ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল হন। ১৯৫১ সালে লিয়াকত আলী খানের হত্যার পর তিনি পাকিস্তানের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী হন।
তার রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গী এবং রাজনৈতিক ব্যর্থতা তাকে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার দুই বছরের শাসনামল অন্তর্দ্বন্দ্ব ও বৈদেশিক চ্যালেঞ্জে পরিপূর্ণ ছিল। ১৯৫৩ সালের লাহোর দাঙ্গার পর পাঞ্জাবে সামরিক আইন জারি করেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৫৩ সালের কাদিয়ানি আন্দোলনের মতো ঘটনাগুলিতে তার সরকার ব্যর্থ হয়। ১৯৫৩ সালের ১৭ এপ্রিল তাকে পদচ্যুত করা হয় এবং মোহাম্মদ আলী বগুড়া প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৬৪ সালে ঢাকায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।
শিক্ষা ও প্রাথমিক জীবন:
নাজিমউদ্দীন ইংল্যান্ডের ডানস্টাবল গ্রামার স্কুল, ভারতের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেমব্রিজের ট্রিনিটি হলে শিক্ষা লাভ করেন। তিনি একজন ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল ছিলেন। তার পিতা খাজা নিজামউদ্দীন এবং মাতা নওয়াবজাদী বিলকিস বানু।
রাজনৈতিক জীবন:
১৯২২ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা মিউনিসিপালটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি বাংলার শিক্ষামন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের পূর্বাঞ্চলে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের প্রধান হিসেবে তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পাকিস্তান গঠনের পর তিনি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদ ধারণ করেন।
সম্মান ও স্মৃতি:
১৯৩৪ সালে তিনি নাইট উপাধি পান। করাচির নাজিমাবাদ ও ঢাকার নাজিমুদ্দীন রোড তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। তার সম্মানে পাকিস্তান ডাকবিভাগ স্মরণিকা ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে।