নবী চৌধুরী

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

মাহমুদুন্নবী চৌধুরী: বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সাবেক মন্ত্রী

মাহমুদুন্নবী চৌধুরী, নবী চৌধুরী নামে পরিচিত, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক জগতে একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ৭ জানুয়ারী ১৯০৮ সালে ব্রিটিশ ভারতের চট্টগ্রাম জেলার পাহাড়তলীর উত্তর কাট্টলীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩০ সালে সরকারি মুসলিম হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৩২ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে আইএসসি এবং ১৯৩৪ সালে একই কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রী লাভ করেন। তার পিতার নাম খাদেম আলী চৌধুরী এবং মাতার নাম আলফুন নেছা।

কর্মজীবনের শুরুতে কলকাতা মেট্রোলজিক্যাল বিভাগে এবং পরবর্তীতে কলকাতায় মওলানা কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। ১৯৩৭ সালে কলকাতায় চৌধুরী অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। ভারত বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে এবং ১৯৫১ সালে দেওয়ানহাটে নবি অ্যান্ড সন্স নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৯ সালে চট্টগ্রাম পৌরসভার কমিশনার নির্বাচিত হন।

রাজনীতিতেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন নবী চৌধুরী। ১৯৫৩ সালে এ.কে. ফজলুল হকের নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক পার্টিতে যোগদান করেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রামের ডবলমুরিং-সীতাকুন্ড আসন থেকে পূর্ব পাকিস্তানের আইনপরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। গণ-যোগাযোগ মন্ত্রী এবং পরে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তার মন্ত্রীত্বকালে সাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণ, টেস্ট রিলিফের প্রচলন এবং চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (এফডিসি) প্রতিষ্ঠা করা উল্লেখযোগ্য।

১৯৫৮ সালে আইয়ুব বিরোধী অবস্থান নেন। ১৯৬২ সালে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি নির্বাচিত হন এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) এর প্রাদেশিক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম জেলার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) এর চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি ছিলেন এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন কমিটির (ডাক) হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে পিডিপি’র প্রার্থী হিসেবে এমএনএ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে চট্টগ্রাম জেলা শান্তি কমিটির প্রধান ছিলেন। রাজনৈতিকভাবে তিনি অখণ্ড পাকিস্তানের সমর্থক ছিলেন।

তার স্ত্রীর নাম মেহেরুন্নেসা বেগম চৌধুরী। তিনি বিশিষ্ট শিল্পপতি আব্দুর রাজ্জাক মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও থাইল্যান্ডের অনারারি কন্সাল আমীর হুমায়ন মাহমুদ চৌধুরী, শাহনেওয়াজ মাহমুদ চৌধুরী এবং মেহের গ্রুপের পরিচালক শাহজাদা মাহমুদ চৌধুরীর পিতা। ৬ আগস্ট ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন। তার স্মৃতি রক্ষার্থে পরিবারের পক্ষ থেকে মাহমুদুন্নবী চৌধুরী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • নবী চৌধুরী ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী।
  • তিনি চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
  • ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানের আইন পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন।
  • গণযোগাযোগ ও ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
  • মুক্তিযুদ্ধকালে চট্টগ্রাম জেলা শান্তি কমিটির প্রধান ছিলেন।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।