নজির হোসেন: একজন অসাধারণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ সালে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শাহপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া নজির হোসেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি ১৯৯১ সালে সুনামগঞ্জ-১ আসন থেকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৩ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তে যোগদান করেন এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে একই আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ছাত্র ইউনিয়নের মাধ্যমে। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়নে যোগদানের পর ১৯৬৬ সালে তিনি সিলেট জেলা ছাত্র ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হন। ১৯৬৮ সালে গোপনে কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দিয়ে তিনি ১৯৬৯ সালে সিলেট জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং সুনামগঞ্জ সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সহ-সম্পাদক ও টেকেরঘাট সাব-সেক্টরের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি সিপিবি'র বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন, এবং ১৯৭৪ সালে রাজনৈতিক পড়াশুনার জন্য মস্কো যান। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ৪ বছর আত্মগোপনে থাকেন এবং মুখস্তা সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য তিনি নিরাপত্তা আইনেও কারাবরণ করেন।
বিএনপিতে থাকাকালীন তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে কাজ করেন এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি সংসদীয় কমিটির সদস্য এবং সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালে তাকে বিএনপি থেকে বহিস্কার করা হয় এবং পরবর্তীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ও বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।
২৮ মার্চ ২০২৪ সালে তিনি উত্তরায় তার বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। নজির হোসেনের রাজনৈতিক জীবন ছিল বহুমুখী এবং তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।