ধর্ষিতা নারী

আপডেট: ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৭:৪৩ এএম

ধর্ষিতা নারী: এক বহুমুখী সমস্যা

বাংলাদেশে নারী নির্যাতন একটি ব্যাপক সমস্যা। ধর্ষণ এর একটি ভয়াবহ রূপ। এই প্রতিবেদনে ২০০০ সালে প্রণীত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (২০০৩ সংশোধনী) এবং ১৯৮০ সালে প্রণীত যৌতুক নিরোধ আইনের প্রয়োগ, সীমাবদ্ধতা এবং উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রথম আলোর আয়োজনে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনা থেকে সংগ্রহকৃত তথ্য এই প্রতিবেদনের ভিত্তি।

আইনের সীমাবদ্ধতা ও বাস্তবায়ন: আলোচনায় উঠে এসেছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সীমাবদ্ধতা। বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়া, আইনের বিধানের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া, ভুক্তভোগী ও সাক্ষীর নিরাপত্তার অভাব, তদন্ত প্রক্রিয়ার দুর্বলতা, আইনের ১১(গ) ধারার অপব্যবহার ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যৌতুক নিরোধ আইনের ক্ষেত্রেও অনুরূপ সমস্যা দেখা যায়।

মামলা নিষ্পত্তির পরিসংখ্যান: বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের আওতায় ২০২৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৫৯টি নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তিকৃত মামলায় শাস্তিপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা মাত্র ২৭। যৌতুক নিরোধ আইনের আওতায় দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা কম এবং শাস্তিপ্রাপ্তের সংখ্যা আরও কম।

প্রস্তাবিত সমাধান: আলোচনায় নানা প্রস্তাব উঠে এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: আইনকে আরও যুগোপযোগী করা, কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের উত্ত্যক্তকরণ প্রতিরোধে নতুন আইন প্রণয়ন, ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ডাক্তারি পরীক্ষা ও তদন্ত প্রক্রিয়ায় নারীদের জড়িত করা, দাম্পত্য জীবনে অর্জিত সম্পত্তিতে স্ত্রীর অধিকার নিশ্চিত করা, এবং বাল্যবিবাহ বন্ধ করা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর আন্তরিকতা, জবাবদিহিতা এবং দক্ষতার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।

অন্যান্য দিক: আলোচনায় নারীদের মানসিকতা, আইনজীবীদের ভূমিকা, পুলিশ ও আদালতের ভূমিকা, সামাজিক সচেতনতা এবং সরকারের ভূমিকা সহ নানা দিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়েছে বিশ্বের প্রতি তিনজন নারীর একজন জীবনে কখনও না কখনও নির্যাতনের শিকার হন।

উপসংহার: ধর্ষিতা নারীদের ক্ষেত্রে একটি সমন্বিত ও কার্যকর প্রতিরোধমূলক কৌশল প্রয়োজন। এতে আইনের প্রয়োগ সহ সামাজিক চেতনা, পুলিশ, আইনজীবী এবং আদালতের ভূমিকা সব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আরও তথ্য প্রয়োজন হলে আমরা আপনাকে পরবর্তীতে জানাব।

মূল তথ্যাবলী:

  • ২০০০ সালে প্রণীত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (২০০৩ সংশোধনী) এবং ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের প্রয়োগে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
  • বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত, আইনের প্রয়োগ দুর্বল, ভুক্তভোগী ও সাক্ষীর নিরাপত্তার অভাব।
  • আইনের ১১(গ) ধারার অপব্যবহার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা।
  • আইনকে আরও যুগোপযোগী করা, নতুন আইন প্রণয়ন, ভুক্তভোগী ও সাক্ষীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, দাম্পত্য সম্পত্তিতে স্ত্রীর অধিকার, বাল্যবিবাহ বন্ধকরণ প্রয়োজন।
  • পুলিশ, আইনজীবী এবং আদালতের দায়িত্বশীল ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - ধর্ষিতা নারী

৬ জানুয়ারী ২০২৫

এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।